লক্ষ্মীপুরে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি খুব একটা। বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি কিছুটা নামলেও এখনো বাড়ি-ঘর তলিয়ে রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের। জেলায় এখনো পানিবন্দী ১০ লাখ মানুষ।
এদিকে সদর উপজেলার কুশাখালীর জাউডগী, নলডগী, বসুদৌহিদা, চরশাহী, আন্ধারমানিক, রায়পুরের চরকাচিয়া ও চরঘাসিয়ার মতো দুর্গম কিছু এলাকায় এখনো ত্রাণ না পৌঁছানোয় সংকটে আছেন এসব জায়গার বাসিন্দারা।
পৌরসভার বাসিন্দা মিলন বলেন, বুধবারের তুলনায় বাসা থেকে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি কমেছে। কিন্তু সামনের যে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছি, সেখান থেকে একটুও নামেনি।
পারভেজ ভূইয়া নামের অপর একজন বলেন, গত ১৫ দিন ধরে পানিবন্দী। তবে অনেক দিন পর সূর্যের দেখা মিলছে। রোদ উঠছে। জমে থাকা জামা-কাপড় শুকাতে পারছি। তবে যেভাবে পানি নামছে, এভাবেই ধীরগতিতে পানি নামলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে সময় লাগবে।
রশিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নেওয়া সুমি বলেন, এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। সামান্য শুকানো খাবার ও ত্রাণ দেওয়া হয়। এটা দিয়ে চলে না।
ভয়াবহ এ বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দী। বিশেষ করে রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মান্দারী, চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, বাঙ্গাখাঁ, কুশাখালী, লাহারকান্দি, পাবর্তীনগর, বশিকপুর, হাজিরপাড়া ও উত্তর জয়পুরসহ ৫৮টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত রয়েছে।
সরকারি হিসাবে পানিবন্দী রয়েছে অন্তত ১০ লাখ মানুষ। ১৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এসব মানুষের কেউ কেউ খাবার, ওষুধ, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানিবাহিত নানা রোগ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে মেঘনার পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে। ধীরগতিতে পানি নামছে। অনেক খালের বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। আশা করি খুবই শিগগিরই বন্যার উন্নতি হবে।