রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে বসতবাড়ি, রিসোর্ট, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ ৯৪টি স্থাপনা পুড়েছে। আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর চার ঘণ্টা ধরে এসব স্থাপনা পোড়ে। এ ঘটনার পর সেখানে পর্যটকদের যেতে নিষেধ করেছে প্রশাসন।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির খবর নিশ্চিত করেছেন সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ন দেব বর্মন। তিনি জানান, আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ৯৪ স্থাপনা। পুড়ে যাওয়া স্থাপনার মধ্যে রিসোর্ট ৩২ টি, বসতবাড়ি ৩৫ টি, দোকান ২০টি ও রেস্টুরেন্ট ৭ টি। পুড়ে যাওয়া ৩৫ বসতের মধ্যে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৯ টি, বাকি বসতগুলো লুসাই জনগোষ্ঠীর।
তবে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের এক বার্তায় জানানো হয়, এ অগ্নিকাণ্ডে ১২০ থেকে ১৪০ টির বেশি রিসোর্ট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, বেলা পৌনে ১টার দিকে প্রথমে ইকো ভ্যালি রিসোর্টে আগুন দেখা যায়। এ আগুন পাশে অবকাশ ম্যানুয়েল রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়লে সাজেক অবকাশ রিসোর্টসহ আরও কয়েকটি রিসোর্টে একের পর এক আগুন লাগে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকজন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। তবে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
আগুনের খবর পেয়ে বাঘাইছড়ি, দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, পানছড়ি, রাঙামাটিসহ নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন থেকে ১১টি ইউনিট সাজেক ভ্যালিতে আগুন নেভাতে আসে। পরে বিকেল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন বিকেলে জানান, আগুন যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে যেতে না পারে সে জন্য পানি ছিটানো হচ্ছে। এই রিসোর্ট এলাকাটি পাহাড়ের ওপর হওয়ায় পানি নিয়ে সংকটে পড়তে হয়েছে।
প্রথম ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখা গেলেও কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে, তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে, রান্নাঘরের সিলিন্ডার অথবা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। তবে প্রশাসনের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, ওই এলাকায় আপাতত পর্যটক যেতে মানা করা হয়েছে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।