ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে নাদির হোসেন নাদু নামে এক পোলট্রি ব্যবসায়ী ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের ওয়াসক ভূঁইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে জোরারগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত নাদির হোসেন (৫২) ওই বাড়ির মৃত দলিলুর রহমানের ছেলে। এক ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তাঁর সংসার। বড় ছেলে প্রবাসে থাকেন, মেয়েরা বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন। তিনি স্থানীয় মিঠাছরা বাজারের পাশে পরিবার নিয়ে ভাড়াবাসায় থাকতেন। স্থানীয় বাজারে রিপাত পোলট্রি ফার্ম ও রুমা ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে তাঁর দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘরের হুকের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ী নাদির হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহালে এটি আত্মহত্যা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
সাবেক ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে নাদির কাকা আমাকে মোবাইল ফোনে জানান তিনি বাড়িতে আসছেন। আমি যেন আধা ঘণ্টা পর কাউকে কিছু না জানিয়ে তাঁর ঘরে গিয়ে দেখা করি। আমি আধা ঘণ্টা পর ওনার বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পরবর্তীকালে দরজা খুলে নাদির কাকাকে একাধিকবার ডেকেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রুমের ভেতর প্রবেশ করি।’
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘এ সময় দেখি একটি রুমে ফ্যানের হুকের সঙ্গে কাকা ঝুলছে। আমি ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করি। বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসেন এবং জোরারগঞ্জ থানায় খবর দিই। পুলিশ এসে লাশ নিচে নামায়। ঘরে তাঁর (নাদির হোসেন) লিখিত একটি চিরকুট তালা দিয়ে চাপ দেওয়া ছিল। আত্মহত্যার আগে তিনি নিজের জন্য কাফনের কাপড় ও স্ত্রীর জন্য সাদা কাপড় কিনে পাশে রেখে দেন।’
রেখে যাওয়া চিরকুটে ব্যবসায়ী নাদির হোসেন নাদু তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি লিখেন, ‘আমার ৮০ লাখ টাকা এনজিও ঋণ রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে সাত লাখ টাকা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়।’