নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা সিবলা খাতুন। কিছুদিন আগেই তাঁর বয়স গড়িয়েছে ৯০ বছরে। জেলার আটটি উপজেলার মতো কবিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে স্বামী-সন্তানসহ পরিবারের ১০ জন সদস্যকে নিয়ে জীবনে প্রথমবারের মতো আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার করম বক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ছয় সন্তানের জননী সিবলা খাতুনের সঙ্গে কথা হয়। তখন সিবলার পাশে ছিলেন তাঁর স্বামী সোলাইমান। স্ত্রীর দাবি, সোলাইমানের বর্তমান বয়স ১০২ বছর। চোখে না দেখতে পারা সোলাইমান কানেও কম শোনেন এবং স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারেন না।
সিবলা খাতুন জানান, চারটি বন্যার কথা তাঁর মনে আছে। তবে কোনো সময়েই বন্যার কারণে বাড়ি ছাড়তে হয়নি তাঁকে। অন্য সময়ে বন্যার পানি সর্বোচ্চ বাড়ির উঠান পর্যন্ত উঠেছে। এবারই প্রথম বাড়ির উঠোন পেরিয়ে বসতঘর ও রান্নাঘরে ঢুকে যায় পানি। খালের পাশেই ঘর হওয়ায় পানির সঙ্গে বসতবাড়িতে উপদ্রব বাড়তে থাকে সাপের। প্রতিদিনই পানি বাড়ছে দেখে নিরুপায় হয়ে গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ছেলেদের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি। এ সময় সিবলার সঙ্গে একই আশ্রয়কেন্দ্রে আসেন তাঁর দুই ছেলে, দুই পুত্রবধূ, তিন নাতি ও দুই নাতনি।
সিবলা খাতুন জানান, আশ্রয়কেন্দ্রের যে কক্ষটিতে উঠেছেন, সেখানে তাঁরা ছাড়াও আরও পাঁচটি পরিবারের মোট ১৮ জন থাকেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং বসতবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ি ফেরার প্রহর গুনছেন তিনি।