হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে দৈনিক ট্রেনের যাত্রী ১০ হাজার, বিকেল পর্যন্ত বাস পেলেন ৫০০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আটকে পড়া যাত্রীদের বিআরটিসি বাসে গন্তব্যে পৌঁছে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: হেলাল সিকদার।

রেলওয়ে রানিং স্টাফদের পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি পালনের চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চট্টগ্রামের যাত্রীরা। কদিন আগে থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনে আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নির্ধারিত সময়ে তা স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনে করে নিজ গন্তব্যে যেতে পারেনি। তবে ভোগান্তি কিছুটা লাঘবে বিকল্প হিসেবে নামানো হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস।

সংস্থাটির বাসগুলো ট্রেনের ওসব যাত্রীদের তুলে কুমিল্লা, চাঁদপুর, ভৈরব, ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হয়েছে। এমনকি যাত্রীদের সামলাতে পর্যটক বহনকারী বিআরটিসির বিশেষ বাসও রাস্তায় নামানো হয়েছে। কিন্তু ট্রেনের যাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী বাসের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের এসব চিত্র দেখা যায়।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দাবি-দাওয়া আদায় নিয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে সকাল থেকে কোনো ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়নি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে নিয়মিত ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর, লোকাল ও মেইলসহ ১৪টি ট্রেনের শিডিউল বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। বাকি ট্রেনগুলোও পরিস্থিতি অনুযায়ী শিডিউল বাতিলের অপেক্ষায় রয়েছে।

এর মধ্যে সকাল থেকে ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন, সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস, ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস, মেঘনা এক্সপ্রেসসহ ১৪টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।

গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে নগরের বটতলী পুরাতন রেলস্টেশনে এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা, রানিং অ্যালাউন্স যোগপূর্বক অবসর ও আনুতোষিক ভাতা প্রদান ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩ নম্বর শর্ত বাতিল করে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে আদেশ জারি না করলে পরদিন ২৮ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী নির্ধারিত দিনে কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি পাহাড়তলী লোকোশেডের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের নেতা-কর্মীরা।

চট্টগ্রামে রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। ফাঁকা রেলস্টেশন প্ল্যাটফর্ম। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রেলওয়ে তথ্যে, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে দৈনিক ১৩টি আন্তনগর ট্রেন, ১১ টি লোকাল ট্রেন ও ৪টি মেইল ট্রেনে করে অন্তত ১০ হাজার যাত্রী নিয়মিত বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। বাসগুলোর আসনসংখ্যা ৪৫ থেকে ৭৫ টি। সে তুলনায় যাত্রীদের তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক নগণ্য। বিকেল পর্যন্ত বাসগুলো অন্তত ৫০০ যাত্রীকে বাসে করে নিজ গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।

বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস ডিপোর ম্যানেজার মো. জুলফিকার আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশনা ছিল ট্রেনের যাত্রীরা যাতে দুর্ভোগে না পড়েন সে ব্যবস্থা নিতে। নির্দেশনা অনুযায়ী, আমাদের বাসগুলোতে করে ট্রেনের যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে যতটা সম্ভব ভোগান্তি লাঘবের চেষ্টা করছি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিআরটিসি’র এসি সার্ভিস, ডাবল ডেকারসহ ৭টি বাস চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে দুটি ডাবল ডেকার বাসসহ আরও কয়েকটি আনা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রাতেও কয়েকটি বাস ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।

মো. জুলফিকার আলী আরও বলেন, ‘ভ্রমণের জন্য ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। ওনারা ট্রেনের যে টিকিট কেটেছেন সেটা আমরা রেখে দিচ্ছি। রেলের শিডিউল অনুযায়ী যাত্রীদের নিয়ে বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রামে রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে রেল যাত্রীদের দুর্ভোগ। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলফিকার আলী বলেন, ‘আমরা ট্রেনের সব যাত্রীদের নিতে না পারলেও কিছু যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে তাঁদের ভোগান্তি লাঘবের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কেনা যাত্রী নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছান। স্টেশনে পৌঁছেই তাঁরা জানতে পারে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোর থেকেই নির্ধারিত ট্রেনের যাত্রীরা স্টেশনে আসতে শুরু করে। তারা ট্রেন বন্ধের বিষয়টি জানতেন না। আমরা মাইকে ট্রেনের শিডিউল বাতিলের ঘোষণা দিই। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিআরটিসি বাসে করে নিজ গন্তব্যে যেতে পারার কথাও বলা হয়েছে। এরপর অনেকেই স্টেশন ছেড়ে গেছেন আবার অনেকেই বিআরটিসি বাসে করে নিজ গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।’

বিকেল ৫টায় সর্বশেষ খবর পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ১৪টি ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে এখনো সুরাহা না হওয়ায় পরের ট্রেনগুলোর শিডিউলের বিষয় পরে জানা যাবে।

চট্টগ্রামে রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় বসে থাকতে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

লাকসামের যাত্রী রিফাত বলেন, ‘আমার মা বাসে চড়তে পারেন না। তিনি বাসে উঠলে বমি করেন। তাই ট্রেনের টিকিট নিয়েছিলাম। এখন তো বাস ছাড়া বিকল্প নাই। তাই বাসেই যেতে হচ্ছে।

ইসরাত জাহান বলেন, অগ্রিম টিকিট কেনার পর আমাদের এ বিষয়ে কোনো এসএমএসও দেওয়া হয়নি রেলওয়ে থেকে। ট্রেন চলাচল না করলে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে তাঁরা জানাতে পারতেন। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন স্টেশনে এসে বিপদে পড়লাম।

বিআরটিসি বাসে করে রওনা হওয়া শাহীন মিয়া নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমরা কয়েক দিন আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কিনে রেখেছিলাম। এখন যেতে হচ্ছে বাসে। এটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ৩০ জানুয়ারি ট্রেনের টিকিটের টাকা ফেরত পাব। জরুরি কাজ হলে বাসে যেতে। তাই বাধ্য হয়েই এখানে বাসে যাচ্ছি।

ফেসবুক লাইভে ওসিকে পেটানোর হুমকি: শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা

রাউজানে কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার দায়ে ২ জনকে জরিমানা

হাটহাজারীতে হোটেলে পুড়ে আহত এক, ২ কোটি টাকার ক্ষতি

সীতাকুণ্ড ডিসি পার্কের ফুলমেলা জমজমাট, ২৬ দিনে আয় আড়াই কোটি টাকা

হামলা মামলায় মতলব উত্তর আ.লীগ নেতা শাহজাহান গ্রেপ্তার

কক্সবাজার সৈকতে আরও ১৪টি মৃত কচ্ছপের খোঁজ

ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে নগ্ন করে পেটানোর হুমকি সন্ত্রাসী সাজ্জাদের

চৌদ্দগ্রামে ১০ মামলার আসামি যুবলীগ নেতা সুমন গ্রেপ্তার

অস্ত্র-গুলিসহ উখিয়ায় ২ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

ফেনীতে একই স্থানে বিএনপির দুপক্ষের কর্মসূচিতে সংঘর্ষ

সেকশন