নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের এক নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরারিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তাঁর নাম জোবাইদা সিদ্দিকা নাবিলা। সিটিটিসি কর্মকর্তা বলছেন, অনলাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই নারী জঙ্গিবাদে সর্বোচ্চ সহিংস হয়ে উঠেছিলেন। আনসার আল ইসলামের তিনি প্রথম কোন নারী জঙ্গি।
রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২৬ তারিখে বাড্ডায় এক আত্মীয় বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার নাবিলা জানায়, সে ২০২০ সালের প্রথম দিকে নিজের নাম পরিচয় গোপন করে ছদ্মনামে একটি ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলে। এক সময় সে ফেসবুকে আনসার আল ইসলামের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ 'তিতুমীর মিডিয়া' এর খোঁজ পায়। তখন সে এই পেজে যুক্ত হয়ে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন উগ্রবাদী ভিডিও, অডিও ও সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে ও তাদের মতাদর্শকে লালন করে। পরবর্তীতে তিনি নিজেই এসব তথ্য মানুষের প্রচার করতে থাকেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে জঙ্গিবাদ প্রচারণার জন্য নাবিলা দুইটি ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, একটি 'শার্পওয়্যার' (ম্যাজেসিং অ্যাপ) ও চারটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট এর তথ্য পাওয়া গেছে। টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৫টির অধিক চ্যানেল নিজে খুলে তা পরিচালনা করত। এসব চ্যানেলে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন উগ্রবাদী সহিংস ভিডিও, অডিও, ছবি ও ফাইল শেয়ার করতেন তিনি। তার নিজের সবগুলা টেলিগ্রাম চ্যানেলে মিলে আনুমানিক ২৫ হাজার সাবক্রাইবার রয়েছে। যারা নিয়মিত তাঁর চ্যানেলগুলা অনুসরণ করে।
সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নাবিলার বিবাহের কথাবার্তা চলছিল, সে ছেলেপক্ষকে জানায় জিহাদের ময়দানে ডাক আসলে সামনের সারিতে শহীদি মৃত্যু বরণ করবে সে। এমন মতাদর্শের না হলে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে না।
এর আগে আনসার আল ইসলামের কোন নারী সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, এর আগে কোন নারী সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য নেই। আনসার আল ইসলামের এই প্রথম কোনো নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। আনসার আল ইসলামের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।
এই জঙ্গি নারীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। তিনি আদালতের আদেশে রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে আছে।