Ajker Patrika

জাবি প্রশাসন শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে

জাবি প্রতিনিধি 
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক মানববন্ধনে তাঁরা এ অভিযোগ করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গড়িমসির প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট এই প্রশাসন ধারণ করে না। যার স্পষ্ট উদাহরণ দেখেছি, জুলাইয়ে হামলাকারী দুই শিক্ষার্থীকে জেলে বসে, হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে। ২৩৩ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও ১৫ জুলাইয়ে আমাদের ভাইবোনদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছিল, তার বিচার হচ্ছে না। শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় তড়িঘড়ি করে এক দিনের মধ্যে মামলা করতে পারলেও জুলাইয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মামলা করতে পারেনি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেনি।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আয়ান বলেন, ‘আমরা আর এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করতে চাই না। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে সে অনুযায়ী যারা দোষী, তাদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে মামলা করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা বিকল্প প্রশাসনের চিন্তা করব, যারা শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর যে প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছিল, তাদের প্রথম কাজ ছিল জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের যেসব সন্ত্রাসী হামলা করেছিল, তাদের বিচার নিশ্চিত করা। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়, যে প্রশাসন শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে দায়িত্ব নিয়েছে, তারা জুলাই স্পিরিট ধারণ করে না। আমরা যখন থেকে প্রশাসনের কাছে বিচারের দাবি জানিয়ে আসছি, তখন থেকে তারা তদন্ত কমিটি করে বিচারের নামে গড়িমসি করছে। তারা বারবার তদন্ত প্রতিবেদনের সময় পিছিয়ে গড়িমসি করে হামলাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। সাত মাস পার হয়ে গেলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। অতি দ্রুত যদি তাদের বিচারের মুখোমুখি না করা হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।’

উজ্জ্বল আরও বলেন, ‘শামীম মোল্লার মতো সন্ত্রাসী মব জাস্টিসে নিহত হওয়ার পর যে বিপ্লবীরা সম্মুখসারিতে যুদ্ধ করে এই গণ-অভ্যুত্থানকে সফল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করেছে। কিন্তু জুলাই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ছাত্রলীগের হামলাকারীরা এখন জেলে বসে, হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খতিয়ে দেখতে হবে, এখানে কোনো শিক্ষকের দায় আছে কি না। যদি কোনো শিক্ষকের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে। সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত