'মামা বসেন, পুলিশ ম্যানেজ করা আছে, তারাও বাঁচুক আমরাও বাঁচি! ঠিক এভাবেই খেতে আসা ক্রেতাদের রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে নির্ভয়ে খাওয়ার কথা বলছেন রেস্টুরেন্ট বয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর গুলশান বাড্ডা লিংক রোডের গুদারাঘাটে অবস্থিত নিউ বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে এমন চিত্রের দেখা মেলে।
রেস্টুরেন্টের একজন বয় বলেন, `পুরো করোনাকালীন সময়ে আমরা হোটেল খোলা রাখছি। সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখি। রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসিয়েই খাবার খাওয়াই। মোহাম্মদপুর, শ্যামলী থেকেও আমাদের এখানে খাবার খেতে কাস্টমাররা আসে।'
নিয়মবহির্ভূত ভাবে খোলা রাখার পরও পুলিশ বাঁধা দেয় না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পুলিশ ম্যানেজ করা আছে। পুলিশ আমগোর হোটেলে আইবো না। সবকিছুই সিস্টেমে চলে। এতে দিন শেষে বিক্রি কইরা ৫০০ লাভ হইলেও তো খারাপ না। বউ বাচ্চা লইয়া চইলা ফিরা খাইতে পারুম। অতিরিক্ত সময় খোলা রাখার পাশাপাশি ভেতরে বসাইয়া খেতে না দিলেও তো হয় না। তাই পুলিশরে ম্যানেজ কইরাই হোটেলের ভেতরে বসাইয়া খাওয়াই এবং রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখি'।
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে হোটেলের ভেতরে বসিয়ে খাওয়াতে পারেন কি না জানতে চাইলে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার বলেন, 'হ্যাঁ আমি ভেতরে বসাইয়া খাওয়াতে পারব। কারণ, বাড্ডা থানা-পুলিশরে প্রতিদিন এক হাজার করে টাকা দেই। তাঁরা এখানে আসবে না। পুলিশরে ম্যানেজ কইরাই আমরা ভেতরে বসাইয়া খাওয়াই। আপনার সমস্যা কি? '
তাঁর নাম ও মালিকের নাম জানতে চাইলে তিনি নাম না জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, 'আপনি কে? আপনাকে আমি নাম বলব কেন? আমি পুলিশ ম্যানেজ কইরা হোটেল চালাই। আপনাকে নাম বলার প্রয়োজন মনে করছি না।'
পুলিশকে ম্যানেজ করে রেস্টুরেন্ট খোলা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, `পুলিশকে ম্যানেজ করে রেস্টুরেন্ট খোলা রাখা এবং ভেতরে বসিয়ে খাওয়ানোর বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে আমরা এক্ষুনি ফোর্স পাঠাচ্ছি। যারা রেস্টুরেন্ট খোলা রেখে ভেতরে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।'
পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে একটি টহল টিম এসে হোটেল ম্যানেজার এবং হোটেল বয়কে আটক করে।
পরবর্তীতে হোটেল ম্যানেজার এবং হোটেল বয়কে রোববার সকালে ডিএমপি অ্যাক্টে অভিযুক্ত রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ জাফরসহ আটককৃতদের আদালতে পাঠায় বাড্ডা থানা–পুলিশ।