Ajker Patrika

তরমুজ নিয়ে ব্যবসায়ী ও ছাত্রদল নেতার মারামারি

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে তরমুজ নিয়ে ব্যবসায়ী ও ছাত্রদল নেতার মধ্যে মারামারি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এরপর বাজারের ব্যবসায়ীরা একত্র হয়ে ছাত্রদল নেতার নির্যাতনের প্রতিবাদে নামেন। এ সময় বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

আজ বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে মারধরে শিকার ফল ব্যবসায়ী শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম রমিজ উদ্দীন সৈকত। তিনি গাজীপুরে জেলা ছাত্রদলের সাবেক কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে ছাত্রদল নেতা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তরমুজ ব্যবসায়ী তাঁকে ও তাঁর লোকজনকে মারধর করেছেন।

মারধরের শিকার ফল ব্যবসায়ীর নাম এনামুল হক মুন্সি। তিনি সাতখামাইর বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ফলের ব্যবসা করে আসছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মঙ্গলবার ইফতারের কিছু আগে ছাত্রদল নেতা রমিজ উদ্দীন সৈকত ও তাঁর লোকজন রেললাইন লাগোয়া বাজারের ফল ব্যবসায়ী এনামুল মুন্সির দোকানে এসে তরমুজ কেনা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ফল ব্যবসায়ীকে কিলঘুষি মারতে থাকেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, বিনা মূল্যে তরমুজ না দেওয়ায় মারধরে শিকার হন এনামুল। তাঁদের অভিযোগ, দেশে রাজনৈতির পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ার পর থেকেই ছাত্রদল নেতা সৈকত তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিনা কারণে যে কারও সঙ্গে মারধরে জড়িয়ে পড়েন। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। মঙ্গলবারও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারে ঢুকে ব্যবসায়ীকে মারধর করেছেন।

মারধরে শিকার ফল ব্যবসায়ী এনামুল হক জানান, ‘ছাত্রদল নেতা সৈকত ও তাঁর কর্মীরা আমার দোকানে এসে তরমুজ নিতে চায়। এ সময় তরমুজ দরদাম করে টাকা ছাড়াই নিতে চাইলে তরমুজ দিতে রাজি হইনি। এ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে আমাকে বেদম মারধর করে সৈকত ও তার লোকজন। পরে আশপাশের অন্য ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করেন।’

এনামুল হক আরও বলেন, প্রথমে লাথি ও ঘুষি মারেন। এরপর লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এ বিষয়ে বাজার কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রমিজ উদ্দীন সৈকত মোবাইল ফোনে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা। তিনি মারধর করেননি। গ্রাম্য রাজনীতির শিকার হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মেপে মেপে উচ্চ দামে তরমুজ বেচার কারণ জানতে চাইলে ফল ব্যবসায়ী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন। এরপর তাঁর লোকজন ফল ব্যবসায়ীকেও হালকা মারধর করেছেন।

সাতখামাইর বাজার কমিটির সভাপতি রাসেল আকন্দ বলেন, ছাত্রদল নেতা সৈকত ও তাঁর লোকজন বাজারের ফল ব্যবসায়ী এনামুলকে মারধর করেছেন। এ নিয়ে বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

শ্রীপুর মডেল থানার এএসআই আবদুল মালেক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি অবগত হয়েছি। পরে ফল ব্যবসায়ীকে আইনের সহায়তা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়।’

শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিফাত মোড়ল বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। এ নিয়ে সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের স্পষ্ট কথা, কেউ সন্ত্রাসীর পরিচয়ে থাকতে পারবে না। তার পরিচয় সে সন্ত্রাসী। সে অপরাধী। পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমরা দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, একটি অভিযোগ করেছেন মারধরের শিকার ফল ব্যবসায়ী। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত