সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও লেখক মাহবুব তালুকদারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব (পরিচালক জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. রুহুল আমিন জানাজায় ইমামতি করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবীবুল আউয়াল জানাজায় শরীক হন। জানাজা শেষে তাঁর কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়।
মাহবুব তালুকদার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বুধবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা, এক পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য বন্ধুবান্ধব ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও মুজিব নগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাঁকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেন। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সময়ে তিনি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাহবুব তালুকদার তাঁর সহকারী প্রেস সচিব (উপসচিব) এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাহবুব তালুকদার ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতাও করেছেন।
তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট সৃজনশীল লেখক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৪০টি। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।