ঢাকার সাভারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকা থেকে সীমা বেগম নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চিহ্নিত মাদক কারবারি স্বপন মিয়ার বাড়ির পাশ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
সীমা বেগম পুলিশ ও র্যাবের তথ্যদাতার কাজ করতেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, পুলিশ গত ১৩ মে স্বপনের স্ত্রী পপি আক্তার (২৩) ও বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ মিয়াকে ইয়াবাসহ আটক করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সীমা বেগম (৪২) মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার মুন্সীকাদিরপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের স্ত্রী। স্বামীর সঙ্গে খনিজনগর এলাকায় বসবাস করতেন।
ঢাকার উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হমিদ মিয়া, স্বপনসহ আরও কয়েকজনে দীর্ঘদিন ধরে বিরুলিয়া ও সাভার পৌর এলাকাসহ মাদক কারবার করে আসছিলেন। স্বপন ও তাঁর স্ত্রী পপিসহ আরও বেশ কয়েকজন সহযোগী রয়েছেন। পৌর এলাকার ইমান্দিপুর, খনিজনগরসহ সাভারে স্বপনের তিনটি বাড়ি রয়েছে।
ডিবি আরও জানায়, গত ১৩ মে ইমান্দিপুরে স্বপনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩০০টি ইয়াবাসহ স্বপনের স্ত্রী পপি আক্তার ও যুবলীগ নেতা হামিদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বপন আগেই পালিয়ে যান। গ্রেপ্তারের পর থেকে হামিদ ও পপি জেলহাজতে রয়েছেন। ওই ঘটনার ১৯ দিন পর ২ জুন সীমা বেগম নিখোঁজ হন।
আজ বেলা ৩টার দিকে স্বপনের খনিজনগরের বাড়ির পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।
নিহতের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘হামিদ মিয়া ও পপি গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে অজ্ঞাত পরিচিত লোকজন আমার মাকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি মা আমাকে জানিয়েছিলেন। এর কয়েক দিন পর মা নিখোঁজ হন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর লাশ পাওয়া যায়।’
তানিয়া আরও বলেন, ‘পুলিশকে তথ্য দেওয়ার কারণে মাদক কারবারিরা আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।’
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, ‘সীমা বেগম আমাদের সহায়তা করতেন। এ কারণে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আমরা কাজ করছিলাম। বিভিন্ন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামে একজনকে আটক করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে সীমার লাশ উদ্ধার করা হয়।’
রিয়াজ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেপ্তার হামিদ, পলাতক স্বপন ও তাঁর স্ত্রী পপি, সাইফুলসহ আরও কয়েকজন একই চক্রের সদস্য। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হামিদ, পপিকে ও সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।