নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার বিকেলে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল হতদরিদ্র মানুষকে পরিমাণের চেয়ে কম দেওয়া হয়। ৫০ জনের বেশি কার্ডধারীর কাছে বিক্রি না করে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ অঞ্চলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধার বিরুদ্ধে। সরকার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের অগ্রিম ৩০ কেজির দুই বস্তা চাল একসঙ্গে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা অধিকাংশ উপকারভোগীকে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। চাল দেওয়ার সময় অনেকের কাছ থেকে সুকৌশলে কাগজে স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে আর দেননি।
উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৬০৯ জন উপকারভোগীর মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয় মাসুদুর রহমান মৃধা নামের ওই ডিলারকে। চাল বিতরণের পর অনেকে মৌখিকভাবে অফিসে এসে চাল না পাওয়ার অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী সেতারা বেগম বলেন, চাল বিতরণের সময় গেলে টিপসই নিয়ে কার্ড নম্বর ৬৭১ ভুয়া বলে চাল না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী আনোয়ার ও ইউসুফ বলেন, ‘আমার মতো অনেকে চাল পাননি। কয়েকবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেও দেই-দিচ্ছি বলে সময় পার করেন। আমাদের চাল গেল কই? এক মাসের বেশি সময় চলে গেলেও এখনো অনেকে চাল পাননি। ভুক্তভোগীরা তাঁর কাছে চাল চাইতে গেলে সদুত্তর না দিয়ে পরে দেখা করতে বলেন।’
তবে ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা প্রথমে অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন। পরে তা স্বীকার করে বলেন, ‘২০ জনের মতো ১০ কেজি করে কম দেওয়া হয়েছে। তা অলিখিত হলেও জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের মানুষকে দিতে হয়েছে। সাত-আটজন পায়নি। তাদের দেওয়া হবে।’
চাল বিতরণে তদারকি কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়ার মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা যাতে চাল পায়, ডিলারের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজগর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অসুস্থ, তাই বাসায় আছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’