টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর সাভারের নয়ারহাটের জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের দরজা ভেঙে বের হয়ে যান। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে তাঁরা একযোগে সবাই পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের সব দাবি মেনে না নিয়ে এভাবে চলে যাওয়া এবং যাওয়ার সময় প্রশাসনিক ভবনের পাহারায় থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা হয়। এর প্রতিবাদে বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে নিটারের শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
৬ শিক্ষক, ৩ কর্মকর্তা ও ৫ কর্মচারীর পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত রোববার বেলা ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ১৮০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। গতকাল সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকার পর কয়েকজনকে পাহারায় রেখে হোস্টেলে চলে যান।
শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে তালা ভেঙে ১৮০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে যান। তাঁরা একযোগে নিটারের পরিচালনা পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ৬ শিক্ষকসহ ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আমরা তাদের পদত্যাগসহ আরও কিছু দাবি জানিয়েছি। কিন্তু শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের পদত্যাগের পরিবর্তে অব্যাহতির আশ্বাস দেওয়া হয়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
জানা যায়, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা নিটারের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কোনো প্রমাণ ছাড়াই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। গতকাল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সহায়তার চেয়েও কোনো সারা পাওয়া যায়নি। এ পর্যায়ে আমরা আজ মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙে বের হয়ে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে আমরা ১৮০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী একযোগে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছি। নিটারের পরিচালনা পর্ষদের কাছে আজই পদত্যাগপত্র জমা দেব।’
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।