জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল থেকে গণ রুম বিলুপ্তিসহ তিন দাবিতে টানা ছয় দিনের মতো ‘অনশন’ কর্মসূচি পালন করছেন ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। তাঁর সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষক ও প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিকে প্রত্যয়ের সঙ্গে কয়েক দফা সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। শিগগিরই অছাত্রদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য। তবে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী সামিউল।
আজ সোমবার রাত ১১টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের মাঠে ‘অনশন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন। এর আগে, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে অবস্থান নিয়ে ‘অনশন’ কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। প্রত্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯ তম ব্যাচ) ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের মাঠে কাঁথা বিছিয়ে শুয়ে আছেন সামিউল। তার পাশে একটি প্ল্যাকার্ডে তিনটি দাবির কথা লেখা। সেগুলো হলো-বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে গণ রুম বিলুপ্তি করা, অছাত্রদের বের করা ও মিনি গণ রুমে অবস্থানরত বৈধ শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিত করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন প্রভোস্ট ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘অনশনের শুরু থেকেই সামিউলের সঙ্গে কয়েকবার দেখা করেছি। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তার জন্য হলে আসনের ব্যবস্থাও করেছি। এ ছাড়া অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েছি। কিন্তু প্রত্যয় আমাদের সময় দিতে রাজি হচ্ছে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের নির্দেশে হলগুলোতে অবস্থানরত অছাত্রদের তালিকা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমার হলের আংশিক তালিকা হয়েছে। তবে অন্য হলগুলোর বিষয়ে প্রাধ্যক্ষদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘প্রত্যয়ের দাবিগুলো যৌক্তিক, তবে বাস্তবায়ন করতে সময় প্রয়োজন। আমরা ইতিমধ্যে গণ রুম বিলুপ্তির জন্য নতুন হল চালু করেছি। বাকি নির্মাণাধীন হলগুলো চালু হলে এ সমস্যা থাকবে না। এ ছাড়া হলে অবস্থানরত অছাত্রদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা অনুযায়ী অছাত্রদের বের করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’