গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে পদবঞ্চিত নেতা কর্মীরা। কমিটি ঘোষণার পর গতকাল শনিবার শহরে গভীর রাত পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলে। এ সময় কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
আজ রোববার দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়ক অবরোধ ও দলীয় কার্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রিমো, রাজীব শেখ, ইয়াদুল নিজামী, লালন শেখ, টিএম শফিকসহ পদ বঞ্চিত নেতারা।
এ দিকে দুপুরে ঘোষিত কমিটি সভাপতি কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি স্বপন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক শামীম দাড়িয়া কর্মী সমর্থকদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রিমো, রাজীব শেখ ও ইয়াদুল নিজামী জানান, ‘শনিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা তার ফেসবুক থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে এক বছরের জন্য মো. স্বপন তালুকদারকে সভাপতি ও শামীম দাড়িয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। ঘোষিত এই কমিটিতে শুধুমাত্র সভাপতি নিউটন মোল্লার স্বাক্ষর রয়েছে। যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এ ছাড়া ঘোষিত কমিটির সভাপতির বয়স পাঁচ বছর ও সাধারণ সম্পাদকের বয়স তিন বছর বেশি, যা গঠনতন্ত্রবিরোধী।
কমিটির সভাপতি স্বপন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক শামীম দাড়িয়া বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছি। সংগঠনে থেকে কলেজ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছি। করোনার আগেই উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু করোনার কারণে সম্মেলন পিছিয়ে যায়। এর জন্য আমাদের বয়স কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানোর পরে তিনি বয়স শিথিল করেছেন। আর এ কারণেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।’
জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা জানান, কোটালীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা পাননি। তাই তিনি ঘোষিত ওই কমিটিতে স্বাক্ষর করেননি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাকে ফোনে ডেকে নেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগ এই কমিটি গঠন করেছে। সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এই কমিটি গঠিত হয়েছে। যারা পদ পায়নি তারা একটু কষ্ট পেয়েছে। তাই তারা পদের জন্য একটু আন্দোলন করছে। তাদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি। সব ঠিক হয়ে যাবে।’
কোটালীপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’