নরসিংদীর রায়পুরায় একটি স্কুলের ফ্যান চুরির অভিযোগে এক যুবককে নির্যাতনের পর তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে উপজেলার লোচনপুরা এলাকায় এমএফ আইডিয়েল হাই স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে বিকেলে বাড়িতে আনার কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ভোরে নিহতের ভাই বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মোহাম্মদ আলী (৫০) লোচনপুর এলাকার মোতালিব মেম্বারের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত আল আমিন (৩৫) উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। স্বজনদের অভিযোগ, তাঁকে চুরির অপবাদ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ না করে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, গতকাল বুধবার ভোর রাতে লোচনপুর বাজার সংলগ্ন মো. ফায়েজউদ্দিন (এম. এফ) আইডিয়াল হাই স্কুলের একটি কক্ষে সিলিং ফ্যান চুরি করতে যান যুবক আল আমিন। স্কুলটির সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায় ঘরে বসেই ওই ঘটনা ফোনে দেখতে পান প্রধান শিক্ষক এসএম বিপ্লব। পরে তিনি লোকজন নিয়ে তাঁকে আটক করেন।
নিহতের ভাতিজা সুজন মিয়া মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকে বলেন, ‘আল আমিন আগে থেকেই চুরি পেশায় জড়িত এবং চুরির টাকায় মাদক সেবন করতেন। পাঁচ বছর আগে দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যুর পর আর বিয়ে করনেনি তিনি। দুই সন্তানকে নিয়েই ছিল তাঁর সংসার। গত রাতে লোচনপুরে একটি স্কুলে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে লোকজন গণপিটুনি দেয়। এতে আল আমিনের কোমরসহ সারা শরীরে আঘাত পান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আনার পর মারা যান।’
নিহতের মা পরিস্কার বেগম বলেন, তাঁর ছেলেকে কয়েক দফা পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। ছেলে হত্যার বিচার চেয়েছেন তিনি।
উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বলেন, পিটুনিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ি নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এমএফ আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম বিপ্লবের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিয়েও তা রিসিভ করেননি।