মানসিক সমস্যার কারণে রাজধানীর স্কুল স্কলাস্টিকার ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর ইভানা লায়লা চৌধুরী ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছিলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ইভানার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেন, ইভানার স্বামী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসান অন্য নারীতে আসক্ত। বিষয়টি তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানত। মানসিক নির্যাতনে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিকেলে ব্যারিস্টার আসিফ বিন আনোয়ারের নেতৃত্বে একদল আইনজীবী শাহবাগ থানায় গিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের সেই আইনজীবীরা ইভানার মারা যাওয়ার আগের কিছু বিষয়ের ডকুমেন্টস থানায় জমা দেন। সেই দলের একজন আইনজীবী অভিযোগ করেন, ইভানার স্বামী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে যুক্ত ছিলেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছে তিনি মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।
প্ররোচনার মাধ্যমে ইভানাকে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যাতে অপরাধীদের শাস্তি হয়, সে জন্য তারা থানায় গিয়েছিলেন বলে জানান।
ইভানার স্বজনেরা অভিযোগ করেন, স্বামী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রাতে ইভানাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অন্য এক নারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। অন্য নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কারণে ইভানার সঙ্গে মনমালিন্য হয়। এরপর আস্তে আস্তে প্ররোচনা দিয়ে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দেওয়া হয়। অন্য নারীর সঙ্গে যোগাযোগের কিছু প্রমাণও তাঁদের কাছে আছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মওদুত হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, `মঙ্গলবার বিকেলে আইনজীবীরা থানায় এসেছিলেন। তাঁরা কিছু কাগজপত্র দিয়েছেন। আমরা অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত করছি। তদন্তে যদি মৃত্যুতে প্ররোচনা কিংবা অন্য কোনো কিছুর প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সাধারণ মামলায় রূপান্তরিত হবে। ঘটনায় আমরা কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।'
গত বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহবাগের হাবিবুল্লাহ রোডের ২ /ক/ ১৪ নম্বর নকশি ভবনের দক্ষিণ পাশে দুই ভবনের মাঝখান থেকে ইভানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বাসায় ইভানার স্বামী, দুই শিশুসন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ থাকতেন।