দেশব্যাপী বিএনপি নৈরাজ্য চালাচ্ছে দাবি করে আজ শনিবার দুপুর ৩টায় মধ্য বাড্ডার প্রগতি সরণিতে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
এদিকে সমাবেশে আসা মিছিলের কারণে ঢাকার ব্যস্ততম সড়ক প্রগতি সরণি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। আওয়ামী লীগের এই শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রগতি সরণি ও আশপাশের এলাকায় সৃষ্ট হয় তীব্র যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষেরা।
আজ শনিবার বিকেলে রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রামপুরা ব্রিজ থেকে হাতিরঝিলের দিকে গাড়িগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাকি গাড়িগুলো সেখানকার ইউলুপ ব্যবহার করে ফিরে যাচ্ছে। অন্যদিকে কুড়িল বিশ্বরোডের দিক থেকে আসা গাড়িগুলোকে নতুন বাজার থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় যানজটের কারণে আফতাবনগর, মেরুল বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা ও নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দাদের কর্মস্থল থেকে হেঁটে বাসায় ফিরতে হয়েছে।
এদিকে আবদুল্লাহপুর থেকে উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত থেকে বনানী পর্যন্তও তীব্র যানজট দেখা গেছে। এ সময় মগবাজার মহাখালী, সাতরাস্তা, কারওয়ান বাজারের উভয় পাশের সড়কেই ছিল যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ। সবগুলো সড়কেই যানবাহন চলছিল ধীর গতিতে। কোথাও কোথাও দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে ছিল গাড়িগুলো।
উত্তরা হাউজবিল্ডিং এলাকা থেকে কাকরাইল যাচ্ছিলেন চাকরিজীবী সনজিত দাস। তিনি জানান, দুপুর ১২টায় রওনা দিয়ে দুই ঘণ্টায় বাড্ডা এসেছেন। যানজটের কারণে বাকি রাস্তা হেঁটেই পার হচ্ছেন।
কুড়িল বিশ্বরোডের এলাকার রাজিব বলেন, ‘সাধারণত টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে রামপুরা আসতে সময় লাগে এক ঘণ্টা, আজ চার ঘণ্টা লেগেছে।’
ফ্যাশন হাউসে কাজ করা জিনিয়া ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে রামপুরা বনশ্রী ইউলুপ ঘুরতেই তার লেগেছে এক ঘণ্টার বেশি সময়।’
সদরঘাট থেকে বাইপাইল সড়কে চলাচল করা বাস ভিক্টর পরিবহনের হেলপার মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘সদরঘাট থেকে দুপুর একটায় বাস ছেড়ে এসেছি। কাকরাইল থেকেই যানজটের শুরু। কাকরাইল থেকে রামপুরা এসেছি আড়াই ঘণ্টা হয়ে গেছে। এখন রাস্তায় বসে আছি।’
সিএনজি চালক ফরহাদ বলেন, ‘উত্তরা থেকে যাত্রী নিয়ে মগবাজার আসতে তিন ঘণ্টার বেশি লেগেছে। এমন যানজটে পড়তে হবে জানলে রাস্তায় বেরই হতাম না।’
ওয়াটার ট্যাক্সিতে কাওরানবাজার থেকে রামপুরা আসা সালমা বেগম বলেন, ‘রাস্তায় যানজট দেখে ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠেছি। এখন এ পাড়ে এসেও দেখি একই অবস্থা। পুরো শহর যেন অচল হয়ে গেছে।’
এদিকে সমাবেশের কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মহাখালী জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. সালাউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, সমাবেশের কারণে প্রগতি সরণি সাময়িক বন্ধ রাখায় যানজট কিছুটা বেড়েছে। তবে অন্যান্য সময়েও সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক প্রজেক্টের কাজ চলমান থাকায় খানা-খন্দের কারণেও যানজট লেগেই থাকে। তিনি বলেন, ‘ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি সন্ধ্যার পরপরই সড়কগুলো স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’