দুর্নীতির দায়ে রাজধানীর গুলশান থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) ও বরিশালের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবিরকে ছয় বছরের এবং তাঁর স্ত্রী সাবরিনা আহমেদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ফিরোজকে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩৮ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৮৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯৪ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান গতকাল বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। ফিরোজকে অর্থদণ্ডের টাকা রায়ের দিন থেকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যর্থতায় তা আদায়যোগ্য হবে। জামিনে থাকা দুই আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর তাঁদের সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি রুহুল ইসলাম খান রায়ের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ফিরোজ কবির ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩১ মে পর্যন্ত কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের গুলশান শাখায় এবং তাঁর স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ ইভার নামে একটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সর্বমোট ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা জমা করেন। তাঁদের ব্যাংক হিসাবগুলোতে পেশার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিপুল অঙ্কের লেনদেন সম্পন্ন হয়।
অধিকাংশ হিসাব খোলার সময় ফিরোজ কবির অর্থের উৎস চাকরি দেখিয়েছেন। কিন্তু যে অঙ্কের লেনদেন হয়েছে, তা বেতন-ভাতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। দুদককে তাঁরা অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা বা প্রমাণ দাখিলে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়, জমা করা ওই অর্থ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুর্নীতি ও ঘুষসংক্রান্ত সম্পৃক্ত অপরাধলব্ধ।
এই অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর গুলশান থানায় মামলা করেন। ২০১৯ সালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তিনি।