আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে আমাদের রাষ্ট্রে একটি বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে বিভাজনের কারণে দেশের মানুষ এখনো এক হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যায় বেনিফিশিয়ারি দল বিএনপি-জামায়াত উগ্র, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে সমাজকে বিভক্ত করেছে। সেই বিভাজনের কারণেই এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল।’
আজ মঙ্গলবার কুষ্টিয়া লালন একাডেমিতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১৩৩ তম তিরোধান দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় লড়াই সংগ্রাম করে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম নয় মাস। পাকিস্তানকে পরাজিত করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। ধর্ম নিয়ে হানাহানি, মারামারি ও বিভাজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কখনো চাইনি।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণে ২০০১ সাল থেকে উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে রাজপথে মিছিল করেছে। সারা দেশে একসঙ্গে সিরিজ বোমা হামলা করে। সে সময় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অস্ত্র সরবরাহ দেখেছিলাম। দেশটাকে মৌলবাদী দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেসব মৌলবাদীদের কঠোর হস্তে দমন করে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, ‘১৩৩ বছর পর এসে লালনের বাণী দিয়ে আমাদের মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে হলে আমাদের লালনের আদর্শ ও বাণীকে অন্তরে ধারণ করতে হবে।’
জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী প্রমুখ।
শেষে মঞ্চে শুরু হয় দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে লালন সংগীতের আসর। এ ছাড়া কালীগঙ্গা নদীর তীরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। এদিকে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ছুটে আসেন হাজারো লালন ভক্তরা।