কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া মডেল থানার একটি হত্যা মামলার আসামি উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত জেলা সদরের আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। তানভীর আরাফাতের আত্মসমর্পণের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান।
কুষ্টিয়া মডেল থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মিললাইন এলাকার লালন শাহ সড়কের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে সুজন হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পাঁচ বছর আগে বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে হত্যার অভিযোগে হওয়া ওই মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে আসামিরা সুজন মালিথাকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সুজন মালিথাকে কুষ্টিয়া শহরের মোল্লাতেঘরিয়া এলাকায় গুলি করে হত্যা করেন। মামলায় কুষ্টিয়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত এজাহারনামীয় আসামি।
এ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন, একই থানার সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মিজানুর রহমান, এসআই সাহেব আলী, এসআই মোস্তাফিজুর রহমান, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা কুষ্টিয়া নাগরিক পরিষদের সভাপতি সাইফুদ্দৌলা তরুণ, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুল ইসলাম, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ আরিফুর হোসেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ এবং জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি সোহাগ আলী।
এই মামলায় ১ অক্টোবর ঢাকা থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিনি বর্তমানে কুষ্টিয়া কারাগারে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সংবাদ থেকে জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় পুলিশ ও দুই দল মাদক কারবারির মধ্যে ত্রিমুখী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সুজন মালিথা (৩০) নামের এক যুবক নিহত হন। পুলিশের দাবি তিনি একজন শীর্ষ মাদক কারবারি। তাঁর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মাদকসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি গুলি, ৫০ বোতল ফেনসিডিল ও ৩০০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।