বাল্যবিবাহের আট মাসের মাথায় স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেছিলেন এক গৃহবধূ। গতকাল মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানি ছিল। আসামি ও বাদীর উপস্থিতিতে শুনানি চলাকালে বিচারকের নজরে আসে ওই গৃহবধূ নাবালিকা।
বিচারক তাৎক্ষণিক দুপক্ষের অভিভাবককে ডাকেন। তাঁদের কাছে বাল্যবিবাহের কারণ জানতে চান। দুপক্ষের কেউই সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় ছেলের বাবা ও মেয়ের মাকে শাস্তিস্বরূপ আদালতের হাজতে পাঠান।
ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌগাছার আমলি আদালতে ঘটে। পরে আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম এক ঘণ্টা পর তাঁদের মুক্তি দেন। একই সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুখ, শান্তি বিরাজে অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের নির্দেশনা দিয়ে আগামী ২৬ জুলাই মামলাটির পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বিচারকের দেওয়া ব্যতিক্রমী এ আদেশ আদালতপাড়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বিচারকের প্রশংসা করতে থাকেন বিচারপ্রার্থীসহ আইনজীবীদের অনেকেই।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৫ জুন যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের আসমত আলীর ছেলে সোহাগ হোসেনের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের মজলিশেই সোহাগ ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এক মাস পর থেকেই বাকি দেড় লাখ টাকার জন্য স্ত্রীকে মারধর করেন সোহাগ। বিয়ের আট মাসের মাথায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূ স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
সূত্র জানায়, ছেলের বয়স ২১ বছর হলেও ওই গৃহবধূর বয়স ১৮ বছরের কম, যা শুনানির সময় আদালতের দৃষ্টিতে আসে। তাঁদের যে বাল্যবিবাহ হয়েছে বিষয়টি আদালতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে প্রতীয়মান হয়। ফলে আদালত দুই অভিভাবককে এই শাস্তি প্রদান করেন।