নেত্রকোনার মদনে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনায় রুকেল মিয়া নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রুকেলের বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার আত্মহত্যা হত্যায় প্ররোচনায় মামলা করা হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর সকালে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বালালী গ্রামের বসতঘর থেকে গৃহবধূ হিমা আক্তারের রক্তাক্ত (৪৬) এবং তাঁর স্বামী নান্দু মীরের (৫৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশের দাবি, রুকেলের সঙ্গে হিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরেই হিমাকে হত্যার পর তাঁর স্বামী নান্দু আত্মহত্যা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নান্দু মীর উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের আলমশ্রী গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ২০ বছর আগে হিমাকে বিয়ে করেন তিনি। এর পর থেকে নান্দু তাঁর শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করতেন। এ দম্পতির সাত বছরের একটি ছেলে ও পাঁচ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এদিকে রুকেল উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের গাবরতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় বালালী বাজারের একটি দোকানের কর্মচারী।
এ দিকে হিমা একপর্যায়ে রুকেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। বিষয়টি তাঁর স্বামী জানার পর পারিবারিক কলহ হয়। এ নিয়ে দুই পরিবারের লোকজন কয়েকবার সালিস করে মীমাংসা করেন। এরপরও যোগাযোগ চালিয়ে যান হিমা। এ ক্ষোভে স্ত্রীকে রেখে নিজ বাড়ি আলমশ্রী গ্রামে চলে যান নান্দু। পরে নান্দু ১০ অক্টোবর আবার শ্বশুর বাড়ি ফিরে এসে ওই রাতেই বসতঘরে স্ত্রীকে হত্যা করেন এবং নিজে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনার পরদিন হিমার ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এদিকে নান্দুর আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়। পুলিশের দীর্ঘ তদন্তরে পর ঘটনার নেপথ্যে থাকা রুকেল মিয়ার নাম প্রকাশ পায়। পরে বুধবার রাতে বালালী বাজারের ওই দোকান থেকে রুকেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উপপরিদর্শক মাসুদ জামালী বাদী হয়ে রুকেলের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন।
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, ‘দীর্ঘ তদন্তের পর স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামীর আত্মহত্যার প্ররোচনায় পরকীয়া প্রেমিক রুকেল মিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। রুকেলের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী মামলা হয়েছে। তাঁকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়।’