সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বাবা। পরিবারে বৃদ্ধ দাদি, প্রতিবন্ধী মা-বোনসহ ছোট আরও তিন বোন রয়েছে আবু রাইহানের। সংসারের একমাত্র কর্মক্ষম বাবাকে হারিয়ে ভরণপোষণের দায়ভার এসে পড়েছে ১৩ বছর বয়সী শিশু রাইহানের ওপর। কোমলমতি এই শিশুর কাঁধে সংসারের ভার যেন পাহাড় তোলার সমতুল্য।
গত শুক্রবার বিকেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান হাবিবুর রহমান। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন তিনি।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, হাবিবুরের আয়েই চলতো পরিবারটি। হাবিবুর রহমান একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় অনেক অভাব-অনটনের মধ্যে তাদের চলতে হতো। মারা যাওয়ার আগে স্থানীয় ব্যক্তি ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়েছিলেন লক্ষাধিক টাকার অর্থ সহায়তা। যা কিস্তি আকারে পরিশোধ করছিলেন। ঋণ রেখেই মারা যাওয়ায় রয়েছে পরিশোধে চাপও রয়েছে।
এদিকে হাবিবুরের ষাটোর্ধ্ব মা আমিনা খাতুন ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন। হাবিবুরের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, বড় মেয়ে আয়েশা খাতুন মানসিক প্রতিবন্ধী। আবু রাইহানসহ মীম আক্তার মাইমুনা, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রিমি আক্তার, চার বছর বয়সী জিমি আক্তার নামের চার শিশু সন্তান রয়েছে। এ অবস্থায় এই অসহায় পরিবারটি বেঁচে থাকার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। পাশাপাশি চালক, ফিটনেস বিহীন গাড়ি ও তাঁর মালিক যেন আইনের আওতায় আসে তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, ‘হাবিবুরের মৃত্যুতে এই পরিবারটি অকূলপাথারে পড়ে গেছে। পরিবারের সাতজন সদস্যের ভার বহন করছিল সে। এদের মধ্যে ভাতাভোগী দুজন প্রতিবন্ধী ও একজন বৃদ্ধ রয়েছে। এ ছাড়া একজন বাদে সবাই শিশু। বাড়ি ভিটা বাদে এদের কোনো আবাদি জমি নেই। আমি সরকার এবং বিত্তবানদের এদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।’
হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘পরিবারটি খুবই দরিদ্র পরিবার। হাবিবুরে মৃত্যুতে পরিবারটি মানবেতর জীবন-যাপন করছে। স্থানীয়ভাবে আমি খোঁজ নিয়ে তাৎক্ষণিক কিছু সহযোগিতা করেছি। এই পরিবারের পাশে সবার সাহায্য সহযোগিতা করা উচিত।’