যৌন হয়রানির অভিযোগে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহাকে স্থায়ী এবং মদদ দেওয়ার অভিযোগে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ৮৪ তম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দুই শিক্ষককে বহিষ্কার করার পাশাপাশি ঘটনা তদন্তর ইতিমধ্যে গঠিত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সিন্ডিকেট।
এর আগে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়। এ ছাড়া রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন, প্রক্টর অফিসসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্রশাসন থেকে কোনো রকম আশ্বাস না পেয়ে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে অবরোধ স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় ১৪ মার্চ জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
আজ সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া সিন্ডিকেট সভা শেষ হয় শেষ হয় বেলা দেড়টায়। বরখাস্তের ঘোষণা আসার পর উল্লাস প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফারাবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসনের আজকের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি, আমরা চাই অধিকতর তদন্ত করে অপর অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিচার নিয়ে অনেক বেশি সন্তুষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকালের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যারা আমাদের সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিন্ডিকেট আজকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে সিন্ডিকেট আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।’
গত ৪ মার্চ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্তের জন্য ৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।