দুর্গাপুর (নেত্রকোণা): কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে খরস্রোতা সোমেশ্বরী নদী। গতকাল শুক্রবার (২১ মে) স্রোতে একটি প্রাণী ভেসে যেতে দেখে নৌকা নিয়ে উদ্ধার করেন নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কয়লা শ্রমিক আব্দুল লতিফ। প্রথমে বিড়াল ভাবলেও ওপরে তুলে কিছুটা সন্দেহ হয়, পরে জানা যায় এটি একটি বিলুপ্ত প্রজাতির মেছো বাঘ।
স্থানীয়দের ধারণা, ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের জঙ্গল থেকে পরিবারের সঙ্গে নদীতে পানি খেতে এসে শাবকটি স্রোতে ভেসে এসেছে। ছোট হওয়ায় সাঁতার না জানার কারণে পাড়েও যেতে পারেনি। পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার আগেই ভাগ্যক্রমে আব্দুল লতিফের নজরে আসে।
এদিকে বাঘের ছানা উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই আব্দুল লতিফের বাড়িতে ভিড় জমান। তবে প্রাণী সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেন এটি বিলুপ্তি প্রজাতির মেছো বাঘ। ঘটনার দিন বিকেলে প্রাণী উদ্ধার বিষয়ক সংগঠন সেভ দা অ্যানিমেল অফ সুসংয়ের সদস্যরাও ছুটে আসেন। তাঁরা এটিকে মেছো বাঘের শাবক বলে নিশ্চিত করে। তবে বাচ্চাটি খুবই ছোট হওয়ায় এর খাবার নিয়ে সবাই চিন্তিত ছিল। এ মেছো বাঘটিকে অবমুক্ত করতে সংগঠনটির সদস্যরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আনেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসানের সহযোগিতায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা বন বিভাগের বিজয়পুর বিট কর্মকর্তা বেলাল হোসেন সরকার ও ফরেস্ট গার্ড মোহাম্মদ আবু তালেবের কাছে শাবকটিকে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমাও উপস্থিত ছিলেন।
বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, এ ছোট মেছো বাঘটির হয়তো এখনো মায়ের দুধ ছাড়ার সময় হয়নি। মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে ফিডার দিয়ে প্রাণীটিকে দুধ পান করানো হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ইউএনও মো. রাজিব উল আহসান জানান, 'দুর্গাপুর একটি সীমান্তবর্তী ও পাহাড়ে ঘেরা উপজেলা। এখানে প্রায় সময়ই বন্যপ্রাণী উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে প্রাণীগুলো সুস্থ না থাকলে পরিচর্চার পরেই বনে অবমুক্ত করা হয়। যেহেতু উদ্ধার হওয়া প্রাণীটি বিলুপ্ত প্রজাতির মেছো বাঘের ছানা তাই আমরা বিষয়টি মাথায় রেখে প্রাণীটিকে পরিচর্যা করে বনে অবমুক্তের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'