ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষ সভা চলাকালীন সংরক্ষিত নারী সদস্যের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারীর করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিশেষ সভার আয়োজন করেন উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম। সভায় পরিষদের ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রোকসানা খাতুন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ অন্যান্য ইউপি সদস্যদের তুলনায় বণ্টনে বৈষম্য করার অভিযোগ তোলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ইউপি চেয়ারম্যান। পরে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই নারী সদস্যের চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করে লাঞ্ছিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
এ দিকে ওই নারী সদস্যকে লাঞ্ছিত এবং সরকারি প্রকল্প বণ্টনে বৈষম্যের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম। সেলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই নারী সদস্য প্রায়ই বিভিন্ন ওয়ার্ড সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই বিষয়টি গতকাল সভায় উত্থাপন করতেই ওই নারী সদস্য উত্তেজিত হয়ে যায়। একপর্যায়ে আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসেন। পরে আমি তাঁকে থামানোর জন্য ধমক দিই এবং সভা পরিত্যাগ করতে বলি। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী সদস্য রাম দা নিয়ে পরিষদে আসে আমাকে মারার জন্য। পরে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা আমাকে রক্ষাকরে।’
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সেলিম খান আরও বলেন, ‘সরকারি যতগুলো প্রকল্প আসে সবগুলোই সমবণ্টন করে দিই ইউপি সদস্যদের মাঝে।’
গতকালের সভায় উপস্থিত একাধিক ইউপি সদস্য জানান, ওই নারী সদস্যকে লাঞ্ছিতের বিষয়টি সত্য নয়। বরং ওই নারী সদস্যই রাম দা নিয়ে যান চেয়ারম্যানকে মারার জন্য।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘সংরক্ষিত নারী সদস্যকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক সংরক্ষিত নারী সদস্যকে লাঞ্ছনার বিষয়ে অবগত হয়েছি। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলেছি।’