পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী সাইদার মালিথাকে (৫৫) হত্যা মামলায় আদালত ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তা ছাড়া পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন সাতজন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। পুলিশ নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত না থাকায় আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়নি। কারাগারে রেখেই রায় ঘোষণার সময় ভার্চুয়ালি তাঁদের আদালতের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা, তাঁর ভাই স্বপন মালিথা, রিপন মালিথা, আশিক মালিথা, রাকিব মালিথা, আরাফাত হোসেন ইসতি, মো. রঞ্জু, মো. জনি ও আলিফ মালিথা।
যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন, দুলাল মালিথা, মো. রাজু, হায়দার মালিথা, সঞ্জু মালিথা ও বেলাল হোসেন উজ্জ্বল। আসামিদের সবার বাড়ি পাবনা। এদের মধ্যে বেশির ভাগই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দিন মালিথার নিকটাত্মীয়। বাকিরা ভাড়াটে খুনি। হত্যাকাণ্ডের শিকার সাইদার মালিথা ও আসামি আলাউদ্দিন মালিথা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সাইদার মালিথা পাবনার সদর উপজেলার চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সাইদার মালিথা ও আলাউদ্দিন মালিথার মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সাইদার মালিথা আলাউদ্দিন মালিথার কাছে ৩০ লাখ টাকা পেতেন। ওই টাকা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তাই সাইদারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা। এ সময় তাঁকে গুলি করা হয়। বুকে গুলি নিয়ে দৌড়ে পাশের বাঁশঝাড়ের দিকে গিয়ে পড়ে যান সাইদার। সেখান থেকে তাঁকে ধরে নজুর মোড়ে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১২টি ছুরিকাঘাত করা হয়। তাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপর হামলাকারীরা লাশ ফেলে রেখে চলে যান। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই মামলার আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার সব আসামিই কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত যে সাতজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন, তাঁদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে।