দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা নীলফামারীতে গত তিন দিন থেকে তীব্র দাবদাহ আর ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে শহর এবং গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। রিকশাচালক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী ও দিনমজুররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গরম সহ্য করতে না পেরে ছিন্নমূল মানুষ গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় খোলা আকাশের নিচে অসহ্য রোদের তাপে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না আগাম আলু চাষাবাদে নিয়োজিত কৃষি শ্রমিকেরা। সৈয়দপুর শহরে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ফুটপাত থেকে আখের রস, লেবুর শরবত ইত্যাদি খেয়ে তৃষ্ণা মিটাতে দেখা যায় অনেককে।
ডিমলা শহরের রিকশাচালক আবুল হোসেন জানান, আশ্বিন মাসে এমন কড়া রোদে রিকশা চালানো কষ্ট হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাটে মানুষজন কম চলাচল করছে। অনেকে প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। গত দুই দিন থেকে সন্ধ্যার দিকে রিকশা নিয়ে বের হন তিনি।
জলঢাকা পৌরসভার কলেজ পাড়ার গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, গরমের মাঝে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের এ সময় ফ্যানের বাতাস না পেয়ে ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, প্রতিটি বাসায় বাসায় এখন জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গরমে সেসব রোগীদের নিয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গত তিন দিন থেকে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আগামী ২-৩ দিন এ অবস্থা বিরাজ করবে বলে জানান তিনি। এরপরে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অমল রায় জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময়ের গরমে রোগবালাই থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে খোলা খাবার এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শেষ রাতের ঠান্ডায় ফ্যান কিংবা এসি না চালানোয় ভালো। প্রচুর পানি ও খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।