নীলফামারীর ডিমলায় সুমি আকতার (২০) হত্যার পাঁচ বছর পর প্রধান আসামি তাঁর স্বামী আলমগীর হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. মাহবুবুর রহমান। মামলায় আলমগীরের পরিবারের অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলমগীর হোসেন ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলি গ্রামের খতিবর রহমানের মেয়ে সুমি আকতারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হয় আলমগীরের। বিয়েতে আলমগীরকে যৌতুক হিসেবে দেড় লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সুমির বাবা। এর মধ্যে ইজিবাইক কেনার জন্য এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। যৌতুকের পাওনা বাকি ৫০ হাজার টাকার জন্য সুমিকে প্রায় নির্যাতন করতেন আলমগীরসহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।
এর প্রায় দু বছর পর ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে সুমিকে মারধরের পর তাঁর গায়ে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে হত্যা করে জামাতা ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেন, আলমগীরের বাবা সিরাজুল ইসলাম, তার মা আনোয়ারা বেগম, বোন শিল্পী বেগম, চাচা ওবায়দুর রহমান, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ফুপু রওশন আরা বেগমকে আসামি করে ডিমলা থানায় মামলা করেন সুমির বাবা খতিবর রহমান। মামলার প্রেক্ষিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল পরিবারের ছয়জনকে অব্যাহতি দিয়ে শুধু আলমগীর হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে ডিমলা থানা। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার হত্যা ও আগুনে পুড়িয়ে মামলার প্রধান আসামি সুমির স্বামী আলমগীর হোসেনের মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করে রায় প্রদান করেছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট রামেন্দ্র বর্ধন বাপ্পী।