গাইবান্ধায় টাকা দাবি করে না পেয়ে গৃহবধূর জিহ্বা কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই গৃহবধূর বোন। পরে পুলিশ রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার রিপন মিয়া (৩০) গাইবান্ধা সদরের পূর্ব কোমরনই কুঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছয় বছর আগে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর গ্রামের বেবী বেগমের (২৫) সঙ্গে রিপনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর করতেন তিনি। বাধ্য হয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা দেয় বেবীর পরিবার। কিন্তু তাতেও রিপনের মন ভরেনি। কয়েক দিন আগে আবারও ৫ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন রিপন।
গত রোববার সকালে টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করেন রিপন। মারধরে স্ত্রী জ্ঞান হারালে ছুরি দিয়ে তাঁর জিহ্বা কেটে দেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে রিপন পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা বেবীকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
বেবী বেগমের স্বজনেরা বলেন, কাটা জিহ্বার যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন বেবী বেগম। কিছুই খেতে বা কথা বলতে পারছেন না।
বেবীর বৃদ্ধ মা রাবেয়া বেগম বলেন, কয়েক দিন আগেও মেয়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাঁর আরেক মেয়ে রিপনকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও তিনি থামেননি। এ ঘটনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান আক্তার বলেন, বেবীর জিহ্বায় ১০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। শুরুতে তাঁর জিহ্বার অবস্থা খারাপ ছিল। তবে দুই-তিন দিনের চিকিৎসায় অবস্থা এখন কিছুটা উন্নতির দিকে।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বোন মঞ্জুআরা বেগম বাদী হয়ে গতকাল সোমবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই অভিযুক্ত রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।