ঠাকুরগাঁও সদরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত ফিরোজ হোসেনের (১৭) মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন দিন আইসিইউতে চিকিৎসা নেওয়ার পর আজ রোববার ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করে সে। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে দুই বন্ধুসহ তিনজন। একই মোটরসাইকেলে থাকা গুরুতর আহত আরেক বন্ধু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ফিরোজ হোসেন ঠাকুরগাঁও সদরের পূর্ব বেগুনবাড়ী গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে ঠাকুরগাও-দিনাজপুর মহাসড়কের ২৯ মাইল এলাকায় ঠাকুরগাঁও থেকে আসা একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ফিরোজদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ফিরোজের বন্ধু একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাসেল ইসলাম (১৭) ও অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রী সুমিত্রা রাণী (৫৫) নিহত হন।
একই মোটরসাইকেলের আরোহী বাকি দুই বন্ধু ফিরোজ ও মেহেদীকে (১৭) গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে ফিরোজ হোসেন মারা যান।
আজ সকালে ফিরোজের মরদেহ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন-প্রতিবেশীরা জানান, একই গ্রামে জন্ম তিনজনের। বেড়ে ওঠাও একসঙ্গে। দিন নেই, রাত নেই একজনের প্রয়োজনে অন্য দুজন ছুটে আসত। যেন তিন শরীরের এক আত্মা ছিল তারা। দুজন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। আরেকজনের অবস্থাও ভালো নয়।
একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা বেলাল হোসেনও। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে কাঁদছেন আত্মীয়-প্রতিবেশীরাও।
এদিকে তিন দিন আগে ছেলেকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রাসেলের মা লায়লা বেগম বলছিলেন, ‘আমি এখন কী নিয়া বাঁচব। আমার মানিকেরে, বুকের ধনরে আমার কাছে আইনা দাও।’
প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, রোববার স্থানীয় মসজিদে জানাজা শেষে ফিরোজ হোসেনকে গ্রামের কবরস্থানে রাসেলের কবরের পাশেই কবর দেওয়া হয়। এ দুই বন্ধুর আচার-ব্যবহারে বড় ভালো ছিল।
দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বোদা হাইওয়ে থানার পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ব্রাস্ট হলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে জোরে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যায়।