ঢাকা: রাজধানীর আটটি মার্কেটের ৮৮ শতাংশ দোকানই ভ্যাট দেয় না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের এসব মার্কেটে জরিপ অভিযান চালায় গোয়েন্দা শাখার তিনটি দল। আজ শুক্রবার তারা জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
রাজধানীর আটটি মার্কেটে মোট ১ হাজার ২৪টি দোকানে জরিপ চালায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট ও গোয়েন্দা শাখা। দেখা গেছে, এর মধ্যে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া দোকানের সংখ্যা ১২০ টি, ভ্যাট দেয় না ৯০৪টি দোকান। এ ছাড়া যে ১২০টি দোকান ভ্যাট দেয় এর মধ্যে ৭৫টি ভ্যাট দেয় পাঁচ হাজার টাকার নিচে। যা অসংগতিপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সেই আটটি মার্কেট হলো—নারায়ণগঞ্জের মার্ক টাওয়ার, সমবায় নিউ মার্কেট, সায়েম প্লাজা, আল হাকিম (পপুলার) সেন্টার, সাভারের সিটি সেন্টার, ঢাকার উত্তরায় ট্রপিক্যাল আলাউদ্দীন টাওয়ার, আরএকে শপিং কমপ্লেক্স এবং বাড্ডায় সুভাস্তু নজর ভ্যালি। এর মধ্যে সুভাস্তু নজর ভ্যালিতে ঢাকা উত্তর কমিশনারেট থেকে বৃহস্পতিবার ৫০০ দোকানকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন দিয়ে মার্কেটের নিচে সেই কাগজ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে নরসিংদীতে দুটি শপিং কমপ্লেক্সে জরিপ চালিয়ে শতভাগ ভ্যাট না দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে একটি গোয়েন্দা দল। এ ছাড়া রাজধানীর আরও ছয়টি মার্কেট ও শপিং কমপ্লেক্সে জরিপ চালানো হয়েছে।
গত ২৪ মে থেকে এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের চারটি জরিপ দল গঠন করেছে। এই দলগুলো রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন বিপণিবিতান, শপিংমল, কারখানা ও সেবা প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন করে ভ্যাট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে।
ভ্যাট সংক্রান্ত এসব তথ্যে সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর, নিবন্ধন সনদ দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শিত আছে কি–না, বিক্রিত পণ্য বা সেবার প্রকৃতি, টিআইএন, দোকানের আয়তন ও ভাড়া, কর্মচারীর সংখ্যা ও তাদের আনুমানিক বেতন, মাসিক গড়ে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ভ্যাট রিটার্ন দিয়েছে কি–না এবং মাসভিত্তিক ভ্যাটের পরিমাণ। মাঠপর্যায়ের এসব তথ্য সংগ্রহের পর স্থানীয় ভ্যাট অফিস এবং ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমের সঙ্গে যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এ পর্যন্ত জরিপে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মার্কেট থেকে ভ্যাট সংগ্রহের ক্ষেত্রে রাজধানীর চেয়ে ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাট দেওয়ায় অনীহা বেশি। এসব এলাকায় ভ্যাট আইন পরিপালন তুলনামূলক কম। তাদের বিষয়ে ভ্যাট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।