পবিত্র রমজান এলেই সারা পৃথিবীর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির প্রত্যাশায় ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হয়ে যায়। একই সঙ্গে মানবতার কল্যাণে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেকে নিয়োজিত করে। যার মধ্যে রোজাদারদের ইফতার করানো একটি অন্যতম আমল। কেননা, একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর মাধ্যমে যে কেউ মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পেয়ে যাবেন একটি রোজার সওয়াব। আর সেই ইফতার যদি বিতরণ করা হয় নিম্নবিত্ত তথা দিনমজুর, গৃহপরিচারিকা, নিরাপত্তারক্ষী, রিকশাচালকসহ সাধারণ পথচারীদের মধ্যে, তাহলে তার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার রোজাদারদের মধ্যে ইফতার বিতরণের তেমনই একটি আয়োজন বিগত পাঁচ বছর যাবৎ রাজধানীর উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের কয়েকজন বসবাসকারীর উদ্যোগে চলমান রয়েছে। প্রকল্পের প্রধান ফটকের বাইরে প্রতিদিন প্রায় ১০০ জনের মধ্যে ইফতার বিতরণের এই উদ্যোগটি বর্তমানে ওই এলাকার মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কেননা, এই ইফতার যাঁরা গ্রহণ করছেন, তাঁরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খেতে পারছেন।
সখিনা আক্তার, যিনি প্রায়ই এখান থেকে ইফতার সংগ্রহ করেন। তিনি এবং তাঁর মতো অনেকেই এই ইফতার পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার অসুস্থ শাশুড়িসহ আমরা এই ইফতার ভাগাভাগি করে খেয়ে থাকি।’
মমিন, একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, ‘সবার জন্য ইফতারের এই খাবার প্যাকেটে করে বিতরণ এবং তার সঙ্গে বোতলজাত পানি কিংবা পানীয় থাকায় রিকশা চালানোর মধ্যে যেখানেই ইফতারের সময় হয়, সেখানেই আমরা এই খাবার দিয়ে ইফতার করতে পারি।’
সবার জন্য ইফতার কর্মসূচির শুরু থেকে সঙ্গে সম্পৃক্ত হাফেজ মাওলানা জোবায়ের হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘বিগত করোনাকালীন লকডাউনের সময় আমি ও মোক্তার হোসেন এই উদ্যোগটি শুরু করি। পর্যায়ক্রমে আমাদের সঙ্গে হাবিবুর সাবেরীন, মাহাবুবুল হক, সাইফ উদ্দিন, শাহেদ আলম, ইমাম হাসানসহ আরও অনেকেই সম্পৃক্ত হয়েছেন ও হচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় আমরা এই উদ্যোগটিকে আরও সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছি; যাতে করে আমরা মানবতার কল্যাণে সুখে-দুঃখে সবার পাশে আরও ব্যাপকভাবে দাঁড়াতে পারি। আমরা ইতিপূর্বে পবিত্র ঈদুল আজহায় প্রতিবেশীর জন্য ঈদ উপহার, বন্যার্ত ও শীতার্ত মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’