নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় আব্দুর রহিম ও লিপি বেগম দম্পতির ঠাঁই হয়েছিল ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের চর কুতুবনগর প্রকল্পের ৪৭ নম্বর ঘরটিতে। সুখে শান্তিতে দিন কাটছিল তাঁদের। আব্দুর রহিম পেশায় গাড়িচালকের সহকারী। তবে এখন বয়সের ভার ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই কাজ আর করেন না। সরকার থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া নিজের ঘরের সামনে হরেক রকম জিনিসের ছোট একটি দোকান দিয়েছিলেন। দোকান থেকে যা উপার্জন হতো, তা দিয়ে চলত তাঁদের জীবন। কিন্তু আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে তাঁদের শেষ সম্বল।
আজ শনিবার দুপুরে আব্দুর রহিমের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ঘরে। এরপর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও শেষ হয়ে যায় আব্দুর রহিম ও লিপি বেগমের ঘরে থাকা সবকিছু। তবে রক্ষা পায় ওই ব্যারাকে থাকা বাকি ৭৪টি ঘর।
প্রতিবেশীরা জানান, দুপুরবেলা ইফতার তৈরি ও রাতের খাবার রান্না করার সময় রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপর আগুন ঘরের তিনটি কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে যায়। তাঁদের শরীরে পরিহিত জামাকাপড় ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে লিপি বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকার কারণে এই প্রকল্পের একটি ঘরে আমাদের জায়গা হয়েছিল। আজ দুপুরে আমি রান্না করছিলাম। হঠাৎ একটা দমকা বাতাস এসে মুহূর্তের মধ্যে রান্নাঘরের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমার সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কাল চাল এনেছিলাম, তা–ও পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন কী খাব, কোথায় থাকব, ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। কিন্তু নদীপথ হওয়ায় আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে বাকি ঘরগুলো রক্ষা করেন।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।