বিনোদন ডেস্ক
অরিন্দম শীলের পরিচালনায় ‘আবর্ত’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে অভিষেক হয় বাংলাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসানের। সমালোচকদের প্রশংসার সঙ্গে প্রথম সিনেমা দিয়েই টালিউডে নিজের অবস্থান শক্ত করেন জয়া। আজ জয়া আহসানের জন্মদিন। এ উপলক্ষে টালিউডে জয়ার প্রথম সিনেমার পরিচালক অরিন্দম তাঁকে নিয়ে লিখেছেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন শিল্পী হিসেবে জয়ার দায়বদ্ধতার এক ঘটনার কথা।
জয়া যখন কলকাতায় আবর্তর শুটিং করছিলেন, দেশে তখন তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। নির্মাতা অরিন্দম তখন সঙ্গে সঙ্গে জয়াকে ঢাকায় ফিরে আসতে বললেও পরিচালকের ক্ষতি হবে বলে শুটিং শেষ করে ফিরতে চেয়েছিলেন জয়া।
অরিন্দম শীলের ভাষ্য, ‘জয়া প্রসঙ্গে একটি ঘটনা না বললেই নয়। ‘‘আবর্ত” সিনেমার শেষ দিনের শুটিং। লোকেশনের ফ্ল্যাটটি আমার বন্ধু হর্ষ নেওটিয়ার। লাঞ্চ ব্রেকের পর কাজ শুরু হবে। হঠাৎ আমার একজন সহকারী এসে বললেন, ‘‘দাদা, জলদি আসুন। জয়াদি খুব কান্নাকাটি করছেন!’’ আমি ছুটে যেতেই দেখলাম, জয়ার দুচোখ বেয়ে জল পড়ছে। করুণ মুখে বলল, ‘‘দাদা, বাবা আর নেই!’’’
অরিন্দম আরও লিখেছেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে ঢাকায় ফিরে যেতে বললাম, কিন্তু জয়া আমাকে যা বলেছিল, আজও আমার স্পষ্ট মনে আছে। ও বলেছিল, ‘‘দাদা, আজকে শুটিং শেষ করতে না পারলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি সিনটা করি।” আমি ওর কথা শুনে হতবাক! কী বলব, বুঝতে পারছি না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমি ওকে তা-ও কাজ করতে বারণ করেছিলাম। তৎক্ষণাৎ ওর ঢাকা ফেরার ব্যবস্থা করলাম। হর্ষকে জানাতেই ও বলল, বাড়িটা রাখাই থাকবে। সবকিছু মিটিয়ে জয়া কলকাতায় আসার পর আমরা ছবির শুটিং শেষ করেছিলাম। এই হচ্ছে জয়া আহসান।’
জয়াকে সিনেমাটিতে কাস্ট করার জন্য কলকাতায় সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় অরিন্দমকে। এ নিয়ে অরিন্দমের কথায়, ‘মনে আছে, সে সময় বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রীকে কাস্ট করার জন্য আমাকে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল। তখন ওটিটি ছিল না। কথায় কথায় দুই বাংলার শিল্পীরা একসঙ্গে কাজ করতেন না। সেখানে জয়া নতুন মুখ, কিন্তু আমি আমার ‘‘ইনস্টিংক্ট” থেকে কিছু বিষয় বুঝে এগিয়েছিলাম। পরে সিনেমা মুক্তির পর আমার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছিল।’
সবশেষ জয়ার জন্য শুভকামনা জানিয়ে অরিন্দম লিখেছেন, ‘জয়াকে নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। অভিনেত্রী হিসেবে ও বারবার আমাদের চমকে দিয়েছে। আরও অনেকটা পথ ওকে অতিক্রম করত হবে। জন্মদিনে আমার কামনা, জয়া যেন ওর পারিবারিক জীবনে সুখে-শান্তিতে থাকে। ভবিষ্যতে যেন ও আরও ভালো কাজ করে, সেটাই চাই। ওর সঙ্গে খুব দ্রুত একটা নতুন কাজ শুরু করার অপেক্ষায় রয়েছি।’