Ajker Patrika

ঈদের সিনেমার ব্যবসায় খুশি সবাই

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
গ্র্যান্ড সিলেট মুভি থিয়েটারে শাকিব খান ও ইধিকা অভিনীত ‘বরবাদ’ দেখছেন দর্শক। ছবি: সংগৃহীত
গ্র্যান্ড সিলেট মুভি থিয়েটারে শাকিব খান ও ইধিকা অভিনীত ‘বরবাদ’ দেখছেন দর্শক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই সিনেমা এখন ঈদকেন্দ্রিক। সারা বছর খালি থাকলেও ঈদের সময় দর্শকে মুখর হয়ে ওঠে হলগুলো। তবে গত কয়েক বছর রোজার ঈদের সিনেমাগুলোতে আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। ‘প্রিয়তমা’, ‘পরাণ’, ‘তুফান’-এর মতো ব্যবসাসফল সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে কোরবানির ঈদে। এবার সেই খরা বুঝি কাটল। রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া ছয় সিনেমার চারটিই দারুণ ব্যবসা করছে। প্রথম দিন থেকে হলে ভিড় বেড়েছে দর্শকের। মুক্তির সাত দিন পেরিয়ে গেলেও সিনেপ্লেক্সগুলোতে এখনো চলছে টিকিটের টানাটানি। সিঙ্গেল স্ক্রিনেও দেখা যাচ্ছে লম্বা সারি।

এবার রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছে ‘বরবাদ’, ‘অন্তরাত্মা’, ‘জংলি’, ‘দাগি’, ‘চক্কর ৩০২’ ও ‘জ্বীন থ্রি’। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হলে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত বরবাদ। সিঙ্গেল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্স মিলিয়ে ১২০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। হলের সংখ্যায় এরপরেই ছিল শাকিবের আরেক সিনেমা অন্তরাত্মা। তবে মুক্তির পর তা আলো ছড়াতে পারেনি। দুই দিন পরেই সিনেপ্লেক্স থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় অন্তরাত্মা। বাকিগুলো চলছে দাপট নিয়ে। আর তাতেই প্রযোজকদের পাশাপাশি হাসি ফুটেছে হলমালিকদের মুখে।

বরবাদ দিয়ে প্রযোজক হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন। প্রথম সিনেমার সাফল্যে খুশি প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শেহরিন আক্তার সুমি। তিনি বলেন, ‘জানতাম, বরবাদ ভালো চলবে। তবে এত সাড়া পাব ভাবিনি। অধিকাংশ হল নতুন রেন্টাল দিয়ে সপ্তাহ বাড়িয়ে নিচ্ছে। মাল্টিপ্লেক্সেও টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি। লেট নাইট শোর ব্যবস্থা করা হয়েছে অনেক জায়গায়। মুক্তির সাত দিন পরেও দর্শকের আগ্রহে ভাটা পড়েনি। আমার ধারণা, কোরবানির ঈদ পর্যন্ত বরবাদ চলবে। তবে সারা দেশে আরও হল বাড়ানো উচিত। হল না থাকায় বাইরে থেকে অনেক দর্শক সিনেমা দেখতে ঢাকায় আসছেন। ঢাকার বাইরে হলের সংখ্যা বাড়ানো গেলে দর্শকের জন্য সুবিধা হয়।’

ব্যবসা নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে দাগির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আইয়ের কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘প্রতিদিনই দাগি হাউসফুল যাচ্ছে। সব সিনেপ্লেক্সেই দাপট দেখাচ্ছে দাগি। ঈদের ছুটির সময় দর্শক সিনেমা দেখবেন, এমন ধারণা আগেই করেছিলাম। তবে ছুটির পর দর্শক উপস্থিতি নিয়ে কিছুটা চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু ছুটির পরেও হাউসফুল যাচ্ছে। এমনকি বেলা ১১টার শো এবং রাতের শেষ শোতেও টিকিট শেষ হয়ে যাচ্ছে। অফিস-আদালত খোলার পরেও মানুষ সিনেমা দেখছেন। আগামী কয়েক দিনের টিকিটও শেষের দিকে। এটা আমাদের জন্য দারুণ অনুভূতি।’

সরকারি অনুদানে চক্কর ৩০২ বানিয়েছেন শরাফ আহমেদ জীবন। সিনেমার সহপ্রযোজকও তিনি। দর্শকের আগ্রহে সন্তুষ্ট হলেও সিনেমার শো নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ আছে তাঁর। জীবন বলেন, ‘সিনেমা বানিয়েছি দর্শকের জন্য। যাঁদের দেখছেন, তাঁরা ভালো বলছেন, এটাই তো সার্থকতা। ব্যাপকভাবে প্রচার করতে পারিনি। শুরু থেকে আমরা বলেছি, চক্করের প্রমোশন করবেন দর্শক। সেটাই কিন্তু হচ্ছে। প্রথম দিন থেকে তাঁরা চক্করের প্রশংসা করছেন। তবে দর্শক রিয়েকশন অনুযায়ী আমাদের শোর সংখ্যা যতটা হওয়া উচিত, ততটা নেই। শুরুতে যতটা শো পেয়েছিলাম, এখন তা নেই। আরও দুটি বিষয় বলব, যে পরিমাণ সিনেমা আমরা রিলিজ দিয়েছি, সেই পরিমাণ হল আমাদের নেই। দ্বিতীয় বাস্তবতা হচ্ছে, ঈদে এতগুলো সিনেমা আসায় সঠিকভাবে ডিস্ট্রিবিউট করা মাল্টিপ্লেক্সগুলোর জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের সিনেমাটি যখন দর্শক দেখতে চাচ্ছেন, তখন কর্তৃপক্ষের উচিত, সেটা দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আশা করি, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরে নেবেন।’

সিনেপ্লেক্সে কম শো পেলেও দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্ট জংলি সিনেমার প্রযোজক জাহিদ হোসেন অভি। তিনি মনে করেন, সামনে আরও বেশি শো পাবে জংলি, সেই সঙ্গে আগামী সপ্তাহ থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিনেও প্রদর্শনী বাড়বে। অভি বলেন, ‘জংলি ফ্যামিলি অডিয়েন্সের সিনেমা। অবশ্যই কমার্শিয়াল সিনেমা; পাশাপাশি সামাজিক বেশ কিছু মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। জংলির সব শো হাউসফুল যাওয়ায় আমরা খুশি। দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় আমরা অভিভূত। তাঁরা তাঁদের ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। যেহেতু অনেক সিনেমার চাপ, তাই হয়তো আমাদের সবগুলো শো মনমতো সময়ে পাইনি। তবে দর্শকের রেসপন্সের কারণে ইতিমধ্যে শোর সংখ্যা বেড়েছে। জংলিকে আমরা লম্বা রেসের ঘোড়া বলতে পারি। যেখানে অন্যান্য সিনেমার শো কমছে, সেখানে আমাদেরটা বাড়ছে। হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, সামনে শোর সংখ্যা বাড়বে। আগামী সপ্তাহ থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিনের সংখ্যাও বাড়বে।’

টেকনিক্যাল কারণে সিঙ্গেল স্ক্রিনে জ্বীন থ্রি মুক্তি দিতে পারেনি জাজ মাল্টিমিডিয়া। ডিসিপি রেডি করতে দেরি হওয়ায় মাল্টিপ্লেক্সেও শোর সংখ্যায় পিছিয়ে পড়েছে সিনেমাটির। তবে যে কয়টি শো পেয়েছে, বেশির ভাগ হাউসফুল যাচ্ছে বলে দাবি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির।

এবার ঈদের সিনেমা নতুন করে আশা দেখাচ্ছে উল্লেখ করে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘ঈদের সিনেমা নিয়ে হলমালিকেরা সন্তুষ্ট। প্রায় সব প্রেক্ষাগৃহ হাউসফুল যাচ্ছে। বরবাদ, জ্বীন থ্রি, দাগি, জংলি, চক্কর—প্রতিটি সিনেমাই দর্শক দেখার চেষ্টা করছে। আমরা আনন্দিত। শিল্পী-কলাকুশলীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তাঁরা হলে দর্শকের কাছে গিয়েছেন। সিনেমা নিয়ে কথা বলেছেন। সব মিলিয়ে একটা উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা হলমালিকেরা প্রযোজকদের অনুরোধ করব, নতুন নতুন সিনেমা তৈরি করুন, এই আমেজটা ধরে রাখুন। নতুন ভাবনা তৈরি করুন, ভালো গল্প উপহার দিন, দর্শক অবশ্যই হলে যাবে।’

ধারাবাহিকভাবে ভালো সিনেমা মুক্তি পেলে হলের সংখ্যা বাড়ার আশাবাদ এই প্রযোজকের। উজ্জ্বল বলেন, ‘সিনেমার ব্যবসা নিয়ে নিরাশ হয়ে পড়েছিলাম। অনেকে এই ব্যবসা থেকে সরে গেছেন, অনেকে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু এই ঈদে যে সাড়া পেয়েছি, তাতে হলমালিকেরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছেন। যে হলগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলোর কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তাঁরা তাঁদের হলগুলো সংস্কার করে পুনরায় চালুর ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আবারও আমাদের হলের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাপ্পা মজুমদারের নতুন গান ‘এই ব্যথা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাপ্পা মজুমদার
বাপ্পা মজুমদার

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গায়ক বাপ্পা মজুমদার। গানের সঙ্গেই তাঁর সতত বসবাস। বাংলা গানের এই খরার সময়েও ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে নিয়মিত গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন বাপ্পা মজুমদার। নিজে যেমন গাইছেন, অন্যদের জন্যেও নতুন গান বাঁধছেন নিয়মিত। এবার তিনি অন্যের কথা ও সুরে গাইলেন ভিন্ন ধাঁচের একটি গান। গানের শিরোনাম ‘এই ব্যথা’।

‘এই ব্যথা কি তোমার অনুগত/ চাইলেই রোদে এসে পেতে দেয় গা/ এই ব্যথা কি দিনান্তে কোনো হাওয়া/ স্বপ্নের মতো সারা রাত্রি জেগে থাকা’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন মাহি ফ্লোরা। সুর করেছেন এহসান রাহি, সংগীতায়োজনে আমজাদ হোসেন। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন শুভব্রত সরকার। ১৮ ডিসেম্বর ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে এই ব্যথা শিরোনামের গানের ভিডিও। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে দেশি ও আন্তর্জাতিক মিউজিক প্ল্যাটফর্মগুলোয়।

এই ব্যথা গানটি প্রসঙ্গে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘অনেক দিন পর আয়োজন করে একটা গান করা হলো। আমি আনন্দিত। এই টিমে যারা কাজ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ট্যালেন্টেড। সবাই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন এই গানে। আরও আনন্দের ব্যাপার হলো, আমার বড় কন্যার জন্মদিনে গানটির প্রকাশ আমাকে মুগ্ধতার অন্য জগতে নিয়ে গেছে। গানটির ভিডিও নিয়ে একটু বলতে চাই, এই ধরনের মিউজিক ভিডিও আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। দেশের মিউজিক ভিডিওর অঙ্গনে এই ভিডিও ভিন্নমাত্রা এনে দেবে বলে বিশ্বাস করি।’

ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ধ্রুব গুহ বলেন, ‘বাপ্পাদার এই ব্যথা গানটি প্রকাশ করতে পেরে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন আনন্দিত। আমি আশা করছি, গানটি শ্রোতাদের অনেক ভালো লাগবে।’

সম্প্রতি ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কার্যালয়ে গানটির প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। নতুন গান প্রকাশ উপলক্ষে বাপ্পা মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন গীতিকার তরুণ মুন্সী, কণ্ঠশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ, লুৎফর হাসান, কিশোর দাসসহ সংগীতাঙ্গনের অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যু: শিল্পী-নির্মাতাদের উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের লড়াকু যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে থমকে গেছে দেশ। শোকাহত দেশের মানুষ। শোকের ছায়া নেমেছে দেশের শোবিজ অঙ্গনেও। একই সঙ্গে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ছায়ানট ও গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়।

হাদি ও তাঁর শিশুপুত্রের একটি ছবি শেয়ার করে ঢাকাই সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’

অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক লিখেছেন একাধিক পোস্ট। একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নামটা মনে রেখো, শহীদ-বীর শরিফ ওসমান হাদি।’ অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘সে কোনো এমপি-মন্ত্রী ছিল না, কারও হক আত্মসাৎ করেনি, সাধারণ মানুষের উপর অন্যায় করেনি। তবুও-সামান্য কথার দায়ে, একটা জীবন এভাবে শেষ হতে পারে?’ ভিন্ন একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনায় আসবে অগ্নিসংযোগ, কিন্তু আসার কথা ছিল হাদির কথা, তাঁর বীরত্বের কথা, খুনের বিচারের কথা। এ দেশে মানুষ মরলে, শোকও নিরাপদ থাকে না। সবকিছুই ঢেকে ফেলা হয় আগুনে, ভাঙচুরে, রাজনীতিতে। এখানে রক্তের রংও রাজনৈতিক। বরাবরই এখানে বিপ্লব বেদখল হয়। বরাবরই আমরা এখানে অসহায়।’

নির্মাতা অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘মৃত্যুও পবিত্র সুন্দর হতে পারে, শহীদ হাদিকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।’

অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ওসমান হাদির একটি ছবি প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে থাকবেন।’

মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল হাদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে লিখেছেন, ‘এটা সত্যিই খুব কষ্টের আর একেবারেই মেনে নেওয়ার মতো না। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন, আর তাঁর শোকাহত পরিবারকে, বিশেষ করে তাঁর ছোট্ট বাচ্চাকে ধৈর্য, শক্তি আর সান্ত্বনা দেন।’ গণমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শোক জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এটি আমার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছে। আগুন ভবন ধ্বংস করতে পারে, সাহস নয়।’

সংগীতশিল্পীদের অস্তিত্ব রক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে অর্ণব লিখেছেন, ‘আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে এবং ভোট দিতে হবে... নয়তো সংগীতশিল্পীরা বিপদে পড়ব। দেখুন ছায়ানটের সাথে কী করেছে! আমাদের পাল্টা লড়াইয়ের একমাত্র উপায় ভোট দেওয়া এবং অন্যদের ভোট দিতে উৎসাহিত করা।’

অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান লিখেছেন, ‘ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তাঁর পরিবার, তাঁর ছোট্ট বাবুটা এই শোক কাটিয়ে উঠুক। রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হোক। দেশে শান্তি ফিরে আসুক হে দয়াময়।’

নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘ওসমান হাদি, শান্তিতে ঘুমান। আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন এবং আপনার পরিবার ও সন্তানকে শক্তি দিন। তারা হয়তো আপনাকে হত্যা করেছে কিন্তু আপনার শুরু করা লড়াই তারা থামাতে পারবে না।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির অকালমৃত্যুর প্রতিবাদের ভাষা ভাঙচুর, নৈরাজ্য হতে পারে না। এই মুহূর্তে সবার এক থাকা প্রয়োজন। দেশে বিশৃঙ্খলা যারা করতে চায় তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের সম্পদের আর ভবিষ্যতের বারোটা বাজায়েন না!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বনন্দিত চীনা ধারাবাহিক এবার বাংলায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীন চীনের ওয়েই সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বহুল আলোচিত চীনা ধারাবাহিক ‘প্রিন্সেস এজেন্টস’। ২০১৭ সালে চীনের হুনান টিভিতে প্রচারের পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ধারাবাহিকটি। এরপর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, পেরুসহ অনেক দেশে অনূদিত হয়ে প্রচারিত হয়েছে। প্রিন্সেস এজেন্টস এবার আসছে বাংলা ভাষায়। দীপ্ত টিভিতে ‘রহস্যময়ী’ নামে আজ ২০ ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহের শনি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকেল ৫টা ৫০ মিনিট ও রাত ৮টা ৩০ মিনিটে দেখা যাবে ধারাবাহিকটি।

তিনটি অভিজাত বংশ ওয়েই, ইউয়েন আর ঝাওদের নিয়ে এগিয়ে গেছে ধারাবাহিকের গল্প। সঙ্গে যুক্ত হয় ইয়ান পরিবার এবং কয়েকটি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। প্রাদেশিক শাসনকর্তারা যেন বিদ্রোহ করতে না পারে, সে জন্য ওয়েই সম্রাট প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের একজন করে ছেলেকে নিজের কাছে এনে রাখে। মার্কুইস ডিংবেই নামে পরিচিত উত্তর ইয়ানের শাসনকর্তা ইয়ান শিচেংয়ের ছেলে প্রিন্স ইয়ান শুন সম্রাটের কাছে বড় হতে থাকে।

ইউয়েন পরিবারের দুজন উত্তরসূরি—ইউয়েন ইউয়ে ও ইউয়েন হুয়ায়। ইউয়েন ইউয়ে অত্যন্ত ধীরস্থির, সৎ এবং কোমল মানসিকতাসম্পন্ন হলেও ইউয়েন হুয়ায় বেশ নিষ্ঠুর আর চঞ্চল। সে যেভাবেই হোক ইউয়েন ইউয়েকে পথ থেকে সরিয়ে দিতে চায়। ঘটনাক্রমে ইউয়েন পরিবারে আগমন ঘটে বিখ্যাত গুপ্তচর লুহির মেয়ে চু-চিয়াওর। অতীতের কিছুই মনে করতে পারে না সে। নিজের যোগ্যতা দিয়ে সে ইউয়েন ইউয়ের ব্যক্তিগত দাসী নির্বাচিত হয়। প্রথম দেখাতেই চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় লর্ড ইউয়েন ইউয়ে। কিন্তু নিজের সামাজিক অবস্থানের জন্য বিষয়টাকে সে কোনোভাবেই প্রকাশ হতে দিতে চায় না।

অন্যদিকে মার্শাল আর্টে দক্ষতা দেখে চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। ইউয়েন, ঝাও আর ওয়েইদের মিলিত ষড়যন্ত্রে প্রিন্স ইয়ান শুনের বাবা মার্কুইস ডিংবেই এবং তার পুরো পরিবার প্রাণ হারায়। পরিবারের সঙ্গে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। কিন্তু তরুণ লর্ডরা যেভাবেই হোক ইয়ান শুনকে সরিয়ে দিতে চায়। অন্যদিকে সম্রাট চান ইয়ান শুনকে গৃহবন্দী করে উত্তর ইয়ানের ওপর নিয়ন্ত্রণ।

রহস্যময়ী ধারাবাহিকটির প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোর্শেদ সিদ্দিকী মরু, প্রযোজনা করেছেন তসলিমা তাহরিন। ধারাবাহিকটির অনূদিত সংলাপ রচনা ও সম্পাদনায় কাজ করেছেন দীপ্ত টিভির নিজস্ব সংলাপ রচয়িতার দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টম ক্রুজের নতুন সিনেমা ‘ডিগার’

বিনোদন ডেস্ক
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা ইথান হান্ট হিসেবে টম ক্রুজ তাঁর যাত্রা শেষ করেছেন এ বছরের মে মাসে। ১৯৯৬ সালে ‘মিশন: ইম্পসিবল’ দিয়ে শুরু হয়েছিল এ যাত্রা। শেষ হয়েছে অষ্টম সিনেমা ‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ দিয়ে। সর্বশেষ সিনেমাটি আয় করেছে প্রায় ছয় শ মিলিয়ন ডলার। এই সাফল্য কাঁধে নিয়েই নতুন জার্নি শুরু করেছেন টম। যুক্ত হয়েছেন মেক্সিকান নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতুর ‘ডিগার’ সিনেমায়।

ইনারিতুর পরিচালনায় কাজ করতে চলেছেন টম ক্রুজ, এ খবর আগেই জানানো হয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে এসেছে সিনেমার শিরোনাম, পোস্টার এবং ৫০ সেকেন্ডের একটি অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ওয়ার্নার ব্রস ও লিজেন্ডারি এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত ডিগার মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর। এবার আর অ্যাকশন নয়, কমেডি চরিত্রে দেখা দেবেন টম ক্রুজ। টিজারে দেখা গেল, একটি পরিত্যক্ত ভবনের নিচতলায় বেলচা হাতে নাচতে নাচতে ঢুকলেন টম। তারপর চরিত্রটিকে দেখা গেল জাহাজে। একইভাবে বেলচা হাতে নাচতে নাচতে রেলিং ধরে হাঁটছে।

জানা গেছে, ডিগার সিনেমায় রকওয়েল নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ। টিজারে আলো-আঁধারিতে যতখানি দেখা গেল, তাতে মনে হচ্ছে, সম্পূর্ণ ভিন্ন এক লুকে এ সিনেমায় হাজির হবেন তিনি। সিনেমার গল্প কী, তা জানা না গেলেও ধারণা মিলেছে, এতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র হিসেবে দেখা যাবে টমকে। মানবতার ত্রাণকর্তারূপে এক ভয়ংকর মিশনে নেমেছে রকওয়েল চরিত্রটি। ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এর পর ডিগার দিয়ে আবার ইংরেজি ভাষার সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন ইনারিতু। যুক্তরাজ্যে ছয় মাস ধরে হয়েছে শুটিং। এতে শুধু অভিনয় নয়, ইনারিতুর সঙ্গে যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনাও করছেন টম ক্রুজ। তিনি ছাড়া অভিনয়ে আরও আছেন সান্ড্রা হুলার, জন গুডম্যান, মাইকেল স্টুলবার্গ, জেসি প্লেমন্স, সোফি ওয়াইল্ড, রিজ আহমেদ, এমা ডি’আর্সি প্রমুখ।

আগামী ২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হবে ডিগার সিনেমার। সেখানেই ইনারিতুর তিনটি সিনেমা ‘বারদো: ফলস ক্রনিকল অব আ হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’, ‘বার্ডম্যান’ এবং ‘টোয়েন্টি ওয়ান গ্রামস’ প্রদর্শিত হয়েছিল। ডিগার সিনেমাকে নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু বর্ণনা করেছেন ‘বিপর্যয়কর মাত্রার একটি নিষ্ঠুর এবং বন্য কমেডি’ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘এটি একই সঙ্গে ভয়ংকর, মজার ও সুন্দর। আমি জানি, দর্শক আমার কিংবা টমের কাছ থেকে কমেডি সিনেমা আশা করে না। তবে এর কাহিনিতে কমেডির সঙ্গে অনেকটা ভয়ের মিশেলও থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত