রাজনৈতিক নেতাদের আপত্তির কারণে কলকাতার একটি সরকারি স্কুলে ঋত্বিক ঘটকের ‘আমার লেনিন’ ও ‘কোমল গান্ধার’ সিনেমার প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে। এ বছর পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে সম্প্রতি ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগিতায় নাকতলা হাইস্কুলে দেখানোর কথা ছিল সিনেমা দুটি। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক অনুমতিও দেন। তবে সিনেমা প্রদর্শনের কয়েক দিন আগে হঠাৎ বেঁকে বসেন তিনি।
ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টকে তিনি জানিয়েছেন, কয়েকজন ব্যক্তি হুমকি দিয়েছেন, এই দুটি সিনেমা দেখানো হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে। তাঁদের সব থেকে আপত্তি ‘আমার লেনিন’ সিনেমাটি নিয়ে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সিনেমার প্রদর্শনী বাতিলের এ ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে টালিউডে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মুখপাত্র ওঙ্কার রায় বলেন, ‘জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে প্রধান শিক্ষক যখন আমাদের কাছে আসেন, তখন তিনি প্রথমে স্ক্রিনিংয়ের বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন। এমনকি তিনি ঋত্বিক ঘটকের ভক্ত বলেও উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারির পর তিনি চাপের মুখে পড়েন এবং আমাদের জানান যে ছবিগুলোর প্রদর্শনে সমস্যা আছে।’
এরপর সংগঠনটি স্থানীয় একটি ক্লাবের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে তারাও তা প্রত্যাখ্যান করে। ফলে রাস্তার পাশে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
নাকতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতীন দাস বলেন, ‘এলাকায় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক হিসেবে পরিচিত, এমন জনাপাঁচেক আমাকে রাস্তায় ধরে মোবাইল ফোনে একটি ফেস্টুনের ছবি দেখিয়ে জানতে চান, স্কুলে কি তা হলে লেনিনের প্রদর্শনী হবে? আমি ঠান্ডা মাথায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। তারপর যখন বুঝতে পারি যে আমার প্রতিষ্ঠান বিতর্কে জড়াচ্ছে, তখন আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ওই সিনেমা দেখানোর অনুমতি বাতিল করে দিই।’
বিষয়টি নিয়ে পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘ঋত্বিকদার এবার জন্মশতবর্ষ। তাঁকে ঘিরে নানা মানুষ নানা রকমের অনুষ্ঠান করবে। তিনি কারও একার নন। তিনি মানুষের সম্পত্তি। তিনি আমাদের গর্ব। এখানে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত।’