Ajker Patrika
হোম > ফ্যাক্টচেক > আজকের ফ্যাক্ট

‘উপদেষ্টা আসিফের বাবা মানুষকে পেটাচ্ছেন’ দাবিতে ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি আ. লীগ নেতা

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক  

‘উপদেষ্টা আসিফের বাবা মানুষকে পেটাচ্ছেন’ দাবিতে ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি আ. লীগ নেতা
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা এক ব্যক্তিকে মারধর করার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা এক ব্যক্তিকে মারধর করছেন— এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি একই ক্যাপশনে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ এবং গ্রুপে ছড়িয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মোটরসাইকেলের পেছনের সিট থেকে নেমে একজন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির গালে চড় মারছেন। কয়েকজন ঠেকাতে এলে তাঁদেরও তিনি প্রতিহত করেন।

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে প্রকাশিত পোস্টটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘উপদেষ্টার বাবা বলে কথা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। আসিফ মাহমুদ সজীব ভৃইয়ার। বাবার পাওয়ার কত দেখেন সাধারণ মানুষ। দেশটা এখন মগের মুল্লুক।’ (বানান অপরিবর্তিত)

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই ভিডিওটি ৮৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং পোস্টটিতে সাড়ে ৩০০ রিঅ্যাকশন পড়েছে। পোস্টটিতে ৩৯টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ৪৩০। পোস্টে অনেকে ভিডিওটি পুরোনো বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া অনেকে এটি গতকাল রাতে ছাত্রলীগের মিছিল উল্লেখ করে কমেন্ট করেছেন। আবার কেউ কেউ ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিকে আসিফ মাহমুদের বাবা উল্লেখ করেও মন্তব্য করেছেন।

মো. ইউনূস আলী (MD Yunus Ali) নামে অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘এ কি শুরু হলো রে ভাই এখন উপদেশের বাপেরাও কি মানুষকে মারবে মরে গেলাম এটা কোন দেশ হল বাংলাদেশ না পাকিস্তান।’ (বানান অপরিবর্তিত)

এম এইচ আলসাঈদ (M H Alsayad) নামের অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘ছেলে উপদেষ্টা বলে কথা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

মুক্তির সংগ্রাম ও মো. জামাল (Md Jamal) নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং মো. মাসুদ (MD Masud) নামে পেজ থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।

ভিডিওটির কিছু কি–ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে দৈনিক কালবেলার একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিতে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালের ৫ জুনে প্রকাশিত।

আসিফ মাহমুদের বাবা এক ব্যক্তিকে মারধর করার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
আসিফ মাহমুদের বাবা এক ব্যক্তিকে মারধর করার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেদিন ভোলার লালমোহনে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী লায়ন হাসনাইন আহমেদকে একই উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ফকরুল আলম হাওলাদার চড় মারেন। সেই সময়ও ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।

কি–ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চে ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৫ জুন তারিখে প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

আসিফ মাহমুদের বাবার বিষয়ে গুগলে সার্চ করে যুগান্তরের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাঁর বাবার নাম বিল্লাল হোসেন

সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা এক ব্যক্তিকে মারধর করার দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি আসিফ মাহমুদের বাবা নন। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুন মাসে ভোলার লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লায়ন হাসনাইন আহমেদকে সেই উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আলম হাওলাদার চড় মারেন। সেই ঘটনার ভিডিওতে আওয়ামী লীগ নেতা ফকরুল আলমকে আসিফ মাহমুদের বাবা দাবিতে ছড়ানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

মুসলিমদের সঙ্গে ইফতার করায় থালাপতি বিজয়ের ছবিযুক্ত ভবন ভাঙার তথ্যটি সঠিক নয়

শাহজালালে স্বর্ণ চুরির ঘটনাটি ২০২৩ সালের

সেলুনে ঘাড় ম্যাসাজের সময় যুবকের মৃত্যুর দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি সাজানো

রাজধানীতে বিপুলসংখ্যক মানুষের বিক্ষোভটি আ.লীগের নয়, ইসকন–বিরোধী মিছিল

ভিজিএফের চাল নিতে গিয়ে নারীদের পদদলিত হওয়ার দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি পাকিস্তানের

যুব মহিলা লীগের নেত্রীকে যুবদলের কর্মী পেটাচ্ছে— এ দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ভারতের

ময়মনসিংহে ধর্ষণের পর হত্যার দাবিতে ভারতে তরুণীর লাশ উদ্ধারের ভিডিও প্রচার

তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক দাবিতে এডিটেড ছবি প্রচার

লক্ষ্মীপুরে হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের দাবিটি সঠিক নয়, যা বলছেন ভুক্তভোগীরা

‘বাংলাদেশিরা খিদেতে ঘোড়ার মাংস খাচ্ছে’, ভারতীয় মিডিয়ার এই দাবির ভিত্তি কী