ফিলিস্তিন ইস্যুতে বেশ কয়েক মাস ধরেই কোমল পানীয় কোকা–কোলাসহ বিভিন্ন পণ্য বয়কটের আহ্বান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। সম্প্রতি নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে একটি বিজ্ঞাপন বানায় কোকা–কোলা বাংলাদেশ। বিজ্ঞাপনটিতে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, ‘কোকা–কোলা ইসরায়েলের পণ্য নয়, মানুষ সঠিক তথ্য না জেনেই পণ্যটি বয়কটের ডাক দিয়েছে।’
বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরই নেটিজেনদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে এই বিজ্ঞাপনের নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে সামনে আসে কোকা–কোলা বয়কটের ডাক। শুধু কোকা–কোলাই নয়, নেটিজেনরা কোকা–কোলার অন্যান্য পণ্যও বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছেন, নিজেরাও বর্জন করছেন। এর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় মালয়েশিয়াপ্রবাসী জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর একটি পুরোনো বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওয়াজের মধ্যে বেহেশতে ঝরনার পানির বর্ণনা করতে গিয়ে মিনারেল ওয়াটার নিয়ে কথা বলছেন মিজানুর রহমান আজহারী। শ্রোতাদের উদ্দেশে আজহারী বলছেন, ‘মিনারেল ওয়াটার খান আপনারা? কোনটা খান? মাম খান, কেউ ফ্রেশ খায়। আর?’
এ সময় শ্রোতাদের মধ্য থেকে কেউ একজন অ্যাকুয়াফিনার নাম বলেন। এরপর মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আর কী খান?...স্পা। আর?’
এক শ্রোতা কোকা–কোলার পণ্য ‘কিনলে’ পানির নাম বলেন। এই শ্রোতার উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘কিনলে পানি, এটা সবচেয়ে ভালো। এটার মধ্যে ঝামেলা কম, এটা টেস্ট করে জানা গিয়েছে। কিনলে খাবেন, কোকা–কোলা কোম্পানির। এটা ভালো পানি। কিনলে সবচেয়ে পিউরিফায়েড ওয়াটার এভার ইন বাংলাদেশ। বাংলাদেশে পাওয়া পরীক্ষিত, সবচেয়ে বিশুদ্ধ পানি হচ্ছে কিনলে।’
সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজটি কখন এবং কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সে সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ইন্টারনেটে ওয়াজটির সম্ভাব্য সবচেয়ে পুরোনো সংস্করণ পাওয়া যায় ‘আইটি শামীম’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে। চ্যানেলটিতে ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল আজহারীর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।
ভিডিওটিতে পরকালে বেহেশতবাসীদের তৃষ্ণা নিবারণে আল্লাহর আপ্যায়ন প্রসঙ্গে সুরা মুহাম্মদের ১৫ নম্বর আয়াত উল্লেখ করে আজহারী বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা জান্নাতবাসীদের জন্য চার ধরনের “শরাবান তহুরা” রাখবেন। এর মধ্যে এক নম্বর হচ্ছে মিনারেল ওয়াটারের ঝরনা।’ এরপরই আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি কোকা–কোলা কোম্পানির ‘কিনলে’ পানি পানের পরামর্শ দেন।
পুরো ব্যাপারটিকে ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে আজহারী লেখেন, ‘পণ্য বর্জন কতটা শক্তিশালী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মালয়েশিয়াতে তা স্বচক্ষে অবলোকন করছি। এখানে ম্যাকডোনাল্ড এবং স্টারবাকস অনেকটা আইসিউতে। বর্জন এবং জনসচেতনতা চলবে একই সঙ্গে। শুধু পণ্যই নয়, ইসলামবিদ্বেষী সবকিছুকেই বর্জন করতে হবে। এবারের ঈদ হোক ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত, হোক চিহ্নিত সকল ইসলামবিদ্বেষী পণ্যমুক্ত।’
ফ্যাক্টচেক সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন: