চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে মাত্র আড়াই হাজার রুপিতে আইওয়াচ বিক্রি করছে ‘ইন্ডিয়ামার্ট’ নামে একটি অনলাইন শপ। এত কমদামে অ্যাপল ব্র্যান্ডের পণ্য! বিজ্ঞাপন দেখে কারও কারও চোখ চকচক করতেই পারে। অবশ্য মিরপুর বা নিউ মার্কেটের মোড়ে ফুটপাথের দোকানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়ই মেলে এমন ঘড়ি।
বিক্রেতাদের দোষই বা দেবেন কী করে? ওরা তো আর বলছে না যে ওরা অ্যাপল কোম্পানির ঘড়ি বিক্রি করছে! ওরা বিক্রি করছে ‘আইওয়াচ’।
অ্যাপলের গেজেটগুলো আইফোন, আইপ্যাড, আইপড, আইম্যাক নামে বাজারে এলেও তাদের স্মার্টঘড়ির নাম কিন্তু ‘অ্যাপল ওয়াচ’, ‘আইওয়াচ’ নয়।
আইফোনের বাকি সব পণ্য ‘আই’ দিয়ে শুরু হলেও ঘড়ির নামকরণ নিয়েই বাঁধে বিপত্তি। আর অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে এরই সুযোগ নিচ্ছেন কিছু বিক্রেতা।
বেশ কিছু ওয়েবসাইট খুঁজে আইওয়াচ নামের স্বল্পমূল্যের যে ঘড়ি পাওয়া যাচ্ছে, তা অ্যাপলের উৎপাদিত ঘড়ি নয়।
এদিকে ২০০৭ সালের জুনে নিউইয়র্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এমজেড বার্গার অ্যান্ড কোম্পানি ‘আইওয়াচ’ শব্দটি ট্রেডমার্ক করার চেষ্টা করে। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সোয়াচ। আইওয়াচ নামটি তাদের আইসোয়াচ (iSwatch) ঘড়ির ক্রেতাদের বিভ্রান্তিতে ফেলে দেবে, এমন যুক্তি দেখিয়ে সফলও হয়।
আর চীনে বিভিন্ন প্রদেশে নয়টি প্রতিষ্ঠানের ‘আইওয়াচ’ ট্রেডমার্ক ছিল। ‘আইওয়াচিং’ শব্দটিও নিবন্ধিত করে আরেক চীনা প্রতিষ্ঠান।
জাপান, মেক্সিকো, তাইওয়ান ও রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে ‘আইওয়াচ’ ব্র্যান্ড ব্যবহারের স্বত্ব পেলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনে আগে থেকেই তাদের নিজস্ব ‘আইওয়াচ’ ছিল। এতগুলো দেশে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ট্রেডমার্ক ব্যবহারের স্বত্ব কেনা অ্যাপলের জন্য একটু বেশিই খরচের ব্যাপার হয়ে যেতো বৈকি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়তো অসম্ভবের পর্যায়ে চলে যেত। তাই সে পথে না হেঁটে সরাসরি ‘অ্যাপল ওয়াচ’ নামটি গ্রহণ করে অ্যাপল।