ফিলিস্তিনের গাজা উপাত্যকায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিঃস্ব বাস্তুচ্যুতদের জীবন আরও কঠিন করে তুলেছে বৈরী আবহাওয়া। একে তো অনেক শীত, তার ওপর প্রবল বৃষ্টি। বৃষ্টির পানির কারণে গাজা উপাত্যকায় হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা গাজাবাসীর কষ্ট দ্বিগুন করেছে।
গাজা উপত্যকায় বন্যা ও মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে নানা ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে একটি ছবি বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা, ‘গাজায় প্রচন্ড শীতের সাথে সাথে বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে মানুষ ভোগান্তির মাঝে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৫০ এর অধিক নবজাতকের ঠান্ডার কারণে মৃ ত্যু র খবর জানিয়েছে গাজার তথ্য দফতর।’
আহলিয়া সাইফুল (Ahaliya Saiful) নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর ছবিটি পোস্ট করা হয়। একই ক্যাপশনে পরবর্তীতে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করা হয়। Alore Poth–আলো নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে আবু রজিন (Abu Rojin) নামে অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টটি সবথেকে বেশি ভাইরাল। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত ১০টা পর্যন্ত পোস্টটিতে ৮৪টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। ছবিটি ফিলিস্তিনের গাজার বলে অনেকে এসব পোস্টে কমেন্টে করেন। খোকন শিকদার (Khokan Sikder) নামে এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লেখেন, ‘ও আল্লাহ ফিলিস্তিনি মুসলমান দের হেফাজত কর।’
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। এতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই তারিখে সুদানের একটি স্থানীয় ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ব্লু ফর নিউজের ওয়েবসাইটে ছবিটি পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে সময় পূর্ব সুদানের কাসালা শহরের ভারী বৃষ্টির ফলে যুদ্ধের কারণে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষের তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবু প্লাবিত হয়।
এ ছাড়া, পূর্ব সুদানের কাসালা শহরের ভারী বৃষ্টির কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়কেন্দ্র প্লাবিত হওয়ার ঘটনায় আল-আহদাত এবং এসায়হা নামক লোকাল গণমাধ্যমে একই ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, অধিক ঠান্ডার কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপাত্যকায় একাধিক শিশু মারা যাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে।
গাজা উপত্যকায় ঠান্ডা ও বৃষ্টির কারণে মানুষের ভোগান্তি অবর্ণনীয়। বিশেষ করে শিশুরা বেশি কষ্টে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে সেটির সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজা উপাত্যকার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, পূর্ব সুদানের কাসালা শহরে ভারী বর্ষণে আশ্রয়কেন্দ্র প্লাবিত হওয়ার ছবি গাজার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।