ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪ সালের অফিশিয়াল ডায়েরি বেরিয়েছে। ডায়েরিটির শেষ দুই পৃষ্ঠাজুড়ে ব্যবহার করা হয়েছে একটি টানেলের ছবি। দাবি করা হচ্ছে, এটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল।
চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের প্রশাসক অধ্যাপক ড. এফ এম এনায়েত হোসেন আজকের পত্রিকার কাছে দাবি করেন, ‘এটি বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি। কমিটি ডায়েরিতে দেওয়ার জন্য যেটি নির্ধারণ করেছে, সেটিই দেওয়া হয়েছে।’
ড. এফ এম এনায়েত হোসেন ডায়েরিতে ব্যবহৃত ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অসীম কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। অসীম কুমার ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের বলেই দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু টানেল আমি নিজে পরিদর্শন করেছি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরি ‘তথ্য নির্দেশিকা মুদ্রণ কমিটি’ নামে একটি কমিটির মাধ্যমে তৈরি করা হয়। ডায়েরির আকার-আকৃতি, গঠন, নকশা ও ছবি—এই কমিটিই নির্ধারণ করে দেয়। এ জন্য কমিটির আহ্বায়ক সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং প্রতি সদস্য তিন হাজার টাকা করে সম্মানী পেয়ে থাকেন।
ছবিটি কি বঙ্গবন্ধু টানেলের?
ডায়েরিতে ব্যবহৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাণ ও প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান স্কানস্কার ওয়েবসাইটে একই ধরনের টানেলের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, এটির নাম এলিজাবেথ রিভার টানেল (সাবেক মিডটাউন টানেল)। টানেলটি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত।
ভার্জিনিয়ার পরিবহন বিভাগের সরকারি ওয়েবসাইটেও ছবিটিকে এলিজাবেথ রিভার টানেল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ছবিগুলোর সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে ব্যবহৃত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ডায়েরিতে ভুল ছবি ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ওই কমিটিতে ছিলাম না। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টানেলের দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটি দেশের মূলধারার দুটি ইংরেজি দৈনিকসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমেও ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মিনহাজুল ইসলাম)