গত ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিব–তামিম দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। সংবাদমাধ্যম, বিজ্ঞাপন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দ্বন্দ্ব বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে আলোচনায় এসেছে। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের অধারাবাহিকতায় এ দ্বন্দ্ব যেন আবার প্রকাশ্যে এল! গতকাল সোমবার (১০ জুন) গ্রুপ পর্বের খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছেন মাত্র ১ ওভার। উইকেট পাননি, দিয়েছেন ৬ রান। ব্যাট হাতে আউট হন মাত্র ৩ রান করে। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও বোলিংয়ের কোটা পূর্ণ করেননি। ব্যাট হাতে মাত্র ৮ রান করে আউট হয়ে গেছেন।
এ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচ শেষে ক্রিকইনফোর টাইম আউট অনুষ্ঠানে প্রশ্নের মুখোমুখি হন তামিম ইকবাল। এই অনুষ্ঠানে তামিমের বক্তব্য নিয়ে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তামিম নাকি বলেছেন, ‘৪ ওভার বোলিং করতে না পারলে সাকিবকে বাদ দেওয়া উচিত!’ এসব সংবাদমাধ্যমের মধ্যে আছে দেশ রূপান্তর, মানবজমিন, ভোরের কাগজ, ঢাকা প্রকাশ, সকাল সন্ধ্যা, ডেইলি বাংলাদেশ, মানবকণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বেশ কিছু স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
আসলেই কি তামিম ইকবাল এমন কিছু বলেছেন?
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ক্রিকইনফোর টাইম আউট অনুষ্ঠানে সাকিবকে নিয়ে দেওয়া তামিমের বক্তব্যটি যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। ক্রিকইনফোর ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪২ মিনিটে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে তামিমের সঙ্গে অতিথি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার মরনে মরকেল ও সঞ্জয় মানজেকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ক্রিকইনফোর উপস্থাপক ইয়াশ ঝা। প্রায় ৩৩ মিনিট দৈর্ঘ্যের অনুষ্ঠানটির ২৭ মিনিটে শুরু হয় ‘র্যাপিড ফায়ার রিভিউ’ নামে একটি পর্ব শুরু হয়। পর্বটি ছিল বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি নিয়ে। পর্বটিতে অতিথিদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ২০ সেকেন্ড সময় দেওয়া হয়।
উত্তরে তামিম খুব তাৎক্ষণিক বলে ওঠেন, ‘ডেফিনেটলি।’ কিন্তু পর মুহূর্তেই কিছুটা বিব্রত ভঙ্গিতে হাসতে হাসতে ‘নো নো নো’ বলতে থাকেন। অনুষ্ঠান থেকে আরও হাসির শব্দ শোনা যায়। এর মধ্যেই তামিম বলতে থাকেন, ‘Definitely I think his 4 overs are very very important. He is an experienced bowler. He has been ranked number one for number of years. So if he is not bowling your four overs, then you have a problem. ’
প্রশ্নোত্তরের পরম্পরা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, বাংলাদেশ দলে সাকিবের আরও অংশগ্রহণ প্রয়োজন আছে বলে উত্তর শুরু করেন তামিম। কিন্তু ‘ডেফিনিটলি’ কথাটি প্রশ্নের পরের অংশের অর্থাৎ সাকিবকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নের জবাব হিসেবে ধরে নেওয়ার সুযোগ থাকায় তিনি ‘নো নো’ বলেন।
‘র্যাপিড ফায়ার রিভিউ’ নামে এই প্রশ্নোত্তর পর্বটিতে মাত্র ২০ সেকেন্ড সময় বেঁধে দেওয়া থাকায় তাড়াহুড়ার কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ তামিম ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তামিম ইকবাল আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘ভিডিওতে যা আছে, আমি তা-ই বলেছি। আমি তাঁকে (সাকিবকে) বাদ দেওয়ার ব্যাপারে কিছু বলেনি।’