অনলাইন ডেস্ক
আর এক দিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এই ঈদ উপলক্ষে ইতিমধ্যেই দেশে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এসব হাটে দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি থাকলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকেও গরু আসার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ প্রচার হচ্ছে। ৫ জুন ‘বিপ্লব অফিশিয়াল’ নামের টিকটক অ্যাকাউন্টে এমন একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়, ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আসছে। তা–ও গরু ও গরুর মাংসের দাম কমছে না।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিশাল এক গরুর পাল জলাভূমি সাঁতরে পার হচ্ছে।
ভিডিওটি আজ শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ লাখের বেশি দেখা হয়েছে, শেয়ার হয়েছে সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি। পোস্টটিতে রিঅ্যাকশন পড়েছে ৭৪ হাজার ৬০০। একই ভিডিও ফেসবুকেও বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ‘পাজয় ট্যুরস’ নামের একটি ভ্রমণবিষয়ক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায়। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির পরিচয়ে ‘চিনচিনা (Chinchiná)’ ও ‘মানিজেলস (Manizales)’ নামে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার দুটি শহরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ভিডিওটি ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর অ্যাকাউন্টটিতে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশনে দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, এটি কলম্বিয়ার কাসানরের সান ফেলিপে থেকে ধারণ করা। ভিডিওটিতে ‘sabana_adentro’ নামের আরেকটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের জলছাপ দেখা যায় এবং পোস্টটিতে অ্যাকাউন্টটিকে ট্যাগও করা হয়েছে।
এই ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটিতেও ভাইরাল ভিডিওটি পাওয়া যায়। এই অ্যাকাউন্টটিও কলম্বিয়া থেকে পরিচালিত হয়। ‘ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আসার দৃশ্য’ দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর অ্যাকাউন্টটিতে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশনেও ‘সান ফেলিপে’ স্থানটির নাম রয়েছে। হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘লাইভ স্টক কলম্বিয়া’ উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভাইরাল ভিডিওটিতে গরু নিয়ন্ত্রণে কয়েকজন ঘোড়সওয়ার কাউবয়কেও (রাখাল) দেখা যায়। এই কাউবয়দের সাধারণত দেখা যায় উত্তর আমেরিকায়। এরা ঘোড়ায় চড়ে তৃণভূমিতে গবাদিপশুর পাল দেখভাল করেন।
কাউবয়দের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, এই সংস্কৃতির উৎস স্পেন। পরবর্তীকালে এই পেশার লোকদের হাত ধরেই এটি আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশে এভাবে ঘোড়ায় চড়ে কোনো রাখালকে গবাদিপশুর দেখভাল করতে দেখা যায় না। এটিও প্রমাণ করে, ভিডিওটি ভারতীয় উপমহাদেশের নয়।