ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ভয়াবহ বন্যা ও ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারী বৃষ্টিপাতে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছে ১৪৭ জন। নিখোঁজ রয়েছে ১২৭ জন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসিকে নিয়ে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম যমুনা টিভির লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়েছে। ফটোকার্ডটিতে লেখা রয়েছে, ‘ব্রাজিলের বন্যার্তদের জন্য ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দান করেছে লিওনেল মেসি’। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৪ হাজার ৭২২ কোটি ৮৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা প্রায়।
ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৭ মে, ২০২৪।
গত রোববার (১২ মে) ‘Indoor E–market shop’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটিতে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১৮ হাজার রিয়েকশন পড়েছে। ফটোকার্ডটি শেয়ার হয়েছে ২৫০–এর বেশি। মন্তব্য পড়েছে সাড়ে ৪০০–এর বেশি। এসব মন্তব্যে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এমন বদান্যতায় মেসির প্রশংসা করেছেন। ফটোকার্ডটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘আবারো কিং মেসির মহানুভবতা দেখলো পুরো বিশ্ব।’
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কথিত ফটোকার্ডটিতে উল্লিখিত তারিখের সূত্রে যমুনা টিভির ওয়েবসাইট, ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে খুঁজে ভাইরাল ফটোকার্ডটির মতো কোনো ফটোকার্ড বা প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। বরং দেখা যায়, ভাইরাল ফটোকার্ডটির সঙ্গে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের পার্থক্য রয়েছে।
প্রসঙ্গত, একই পেজ থেকে মেসিকে নিয়ে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ডিবিসি নিউজের একটি ফটোকার্ড ভাইরাল হতে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। ফটোকার্ডটি প্রচার করে দাবি করা হয়েছিল, আর্জেন্টিনার এক ক্লাবে খেলতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় জামাল ভূঁইয়ার বেতন পরিশোধ করতে পারেনি ক্লাবটি। জামাল ভূঁইয়া বাংলাদেশের খেলোয়াড় জানতে পারার পর সব বকেয়া লিওনেল মেসি পরিশোধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জামাল ভূঁইয়া ও মেসিকে নিয়ে এমন কোনো ফটোকার্ড বা প্রতিবেদন করেনি ডিবিসি নিউজ।
এ ছাড়া অন্য কোনো সংবাদমাধ্যম বা মেসির সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রেও ব্রাজিলের বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য মেসির অর্থদানের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নিশ্চিতভাবে, মেসি এমন কোনো দানের ঘোষণা দিলে সেটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসহ দেশীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচার হতো।
সুতরাং, ব্রাজিলের বন্যার্তদের জন্য লিওনেল মেসির ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দানের দাবিটি সঠিক নয়।