ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
নীলফামারীর জলঢাকায় ২৯টি বাচ্চাসহ একটি রাসেলস ভাইপার মারা হয়েছে দাবিতে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম গত সোমবার (২৪ জুন) কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব সংবাদমাধ্যমের মধ্যে আছে কালবেলা, দেশ রূপান্তর, জাগোনিউজ ২৪, জনকণ্ঠ, নয়াদিগন্তসহ একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, সোমবার বেলা ১১টায় জলঢাকার কৈমারী ইউনিয়নের আলশিয়াপাড়া তিস্তার বাঁধে একটি নৌকার নিচ রাসেলস ভাইপার সাপটির দেখা মেলে। পরে স্থানীয়রা খোঁচা দিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলে। মেরে ফেলার পর সাপটির পেট থেকে একে একে ২৯টি বাচ্চা বের করা হয়।
তবে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নীলফামারীর জলঢাকায় বাচ্চাসহ মেরে ফেলা সাপটি রাসেলস ভাইপার নয়। রাসেলস ভাইপারের সঙ্গে মেরে ফেলা সাপটির দৈহিক গঠনে পার্থক্য রয়েছে। রাসেলস ভাইপার সাপের দৈহিক গঠনে ফ্যাকাশে কমলা বাদামি রঙের পিঠের ওপর লালচে বাদামি রঙের ডিম্বাকৃতি বা চাকতির মতো দেখতে কালো বর্ণের সীমানাযুক্ত বড় বড় বৃত্ত দেখা যায়। যা মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত তিনটি সারিতে শিকলের মতো চলে গেছে। নীলফামারীতে রাসেলস ভাইপার দাবিতে মেরে ফেলা সাপটির দৈহিক গঠনে এমন কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
প্রাণীবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘অ্যানিমালিয়া’র ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সাপটির পিঠে অজগরের মতোই বড় বড় দাগের প্যাটার্ন রয়েছে। সাইবোল্ডের পাইন্না সাপ লেজসহ ৮৯ সেন্টিমিটার (৩৫ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে দৈর্ঘ্য (লেজ সহ) অর্জন করতে পারে। সাপটি বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও নেপাল অঞ্চলে দেখা যায়।
‘ইন্ডিয়ান স্নেকস’ নামে সাপ বিষয়ক আরেকটি ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, সাইবোল্ডের পাইন্না সাপের দেহ চকচকে মসৃণ আঁশ দিয়ে আবৃত এবং সংকুচিত লেজ দিয়ে শেষ হয়। এর ওপরের অংশটি প্রধানত গাঢ় জলপাই সবুজ বা বাদামি বর্ণের হয় এবং সারা শরীরে হালকা রঙের অপ্রতিসম সম্পূর্ণ বা অসম্পূর্ণ ব্যান্ড থাকে। এই ব্যান্ডগুলো সাধারণত দেহের পাশের দিকে প্রশস্ত হয়। বিষের দিক থেকে এটি মৃদু বিষধর। এসব বর্ণনার সঙ্গে নীলফামারীতে মেরে ফেলা সাপটির দেহের মিল রয়েছে।
বন্য প্রাণী ও সাপ সংরক্ষণে কাজ করা নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডিপ ইকোলজি এবং স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মাহফুজুর রহমানও আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে নিশ্চিত করেন, এটি সাইবোল্ডের পাইন্না সাপ।