অনলাইন ডেস্ক
২০ লাখ বেসামরিক ফেডারেল কর্মীকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন প্রশাসন ছোট করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ। এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কর্মীরা যদি আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করেন তাহলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের বেতন দেওয়া হবে। আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
গতকাল মঙ্গলবার ফেডারেল কর্মীদের ‘বিলম্বিত পদত্যাগ কর্মসূচি’ সংক্রান্ত একটি ইমেইল পাঠানো হয়। ইমেইলে বলা হয়, যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দিতে রাজি হন, তাহলে তারা ৮ মাসের বেতনের সমান অর্থ পাবেন। যেসব কর্মী এই চুক্তিতে রাজি থাকবেন, তাদের ‘রিজাইন’ (পদত্যাগ) শব্দটি লিখে ফিরতি ইমেইল দিতে বলা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন আশা করছে, অন্তত ১০ শতাংশ কর্মী অর্থাৎ ফেডারেল সরকারের ২০ লাখেরও বেশি কর্মীর মধ্যে প্রায় ২ লাখ কর্মী এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। সেটি হলে সরকারের ১০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে সব ফেডারেল কর্মীদের এই প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। পোস্টাল কর্মী, সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা এবং কিছু জাতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা এই প্রস্তাবের বাইরে আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারের এইচআর সংস্থা অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আমরা আপনার পদ বা এজেন্সির নিশ্চয়তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দিতে পারি না, তবে যদি আপনার পদ বিলুপ্ত করা হয়, তাহলে আপনার সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা হবে।’
এই ইমেইল পাঠানোর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, যেসব ফেডারেল কর্মী কোভিড মহামারির সময় থেকে ‘হোম অফিস’ করছেন, তাঁদের সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে উপস্থিত হতে হবে।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ফর পলিসি স্টিফেন মিলার বলেন, সরকারের ২০ লাখ কর্মী প্রধানত ‘বামপন্থী’, এই প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিতে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ‘অপরিহার্য’।
ফেডারেল শ্রমিক ইউনিয়ন আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ (এএফজিই) তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে। তাঁরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ ফেডারেল কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার প্রভাব বেশ ভয়াবহ হতে পারে। কার্যকর ফেডারেল সরকারের ওপর নির্ভরশীল আমেরিকানদের জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক নির্বাহী আদেশ ও নীতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য হলো ফেডারেল সরকারকে এমন একটি বিষাক্ত পরিবেশে পরিণত করা, যেখানে কর্মচারীরা থাকতেও চাইলে থাকতে পারবে না।’
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বারবার সরকারের আকার কমানো এবং ফেডারেল ব্যয় কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি ইলন মাস্ক ও বিবেক রামাস্বামীকে ফেডারেল সরকারের মধ্যে নিয়ম, ব্যয় ও কর্মীসংখ্যা কমানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অবশ্য রামাস্বামী পরবর্তীতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডোজ) নামে এই বিভাগ ছেড়ে চলে গেছেন।