ব্রাজিলে বাদুড় থেকে পাওয়া নতুন একটি করোনাভাইরাসের সঙ্গে মারাত্মক মার্স ভাইরাসের মিল পেয়েছেন গবেষকেরা। তবে এটি মানুষের জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ব্রাজিলের সাও পাওলো ও সেয়ারা রাজ্যের গবেষকেরা হংকং ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় নতুন ওই করোনাভাইরাস আবিষ্কার করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রজনিত সিনড্রোম ‘মার্স-কোভ’ এর সঙ্গে নতুন ভাইরাসটির অনেক মিল রয়েছে।
২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম শনাক্ত হওয়া মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে এখন পর্যন্ত ৮৫০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। ভাইরাসটি ধীরে ধীরে দুই ডজনেরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্রাজিলে পাওয়া নতুন করোনাভাইরাসের জিনগত বিন্যাসের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের মার্স ভাইরাসের ৭২ শতাংশ মিল রয়েছে। বিশেষ করে ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন মার্স ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়।
গবেষণার প্রধান লেখক ও পিএইচডি গবেষক ব্রুনা স্টেফানি সিলভেরিও বলেছেন, ‘এটি মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটাতে পারে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনের কিছু অংশ শনাক্ত করা হয়েছে, যা মার্স ভাইরাসের রিসেপ্টরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।’
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, চলতি বছর হংকংয়ের উচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট গবেষণাগারে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন ভাইরাসটি মানুষের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
জার্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজিতে প্রকাশিত এই সম্পর্কিত গবেষণায় ১৬টি ভিন্ন বাদুড় প্রজাতির ৪২৩টি মুখগহ্বর ও মলদ্বারের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে গবেষকেরা ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর ফোরতালেজায় সংগ্রহ করা বাদুড়ের নমুনার মধ্যে পাঁচটি থেকে সাতটি করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছেন। নতুন ভাইরাসটি মানুষ ও উটের মধ্যে সংক্রমিত হওয়া মার্স ভাইরাসের সঙ্গে উচ্চ মাত্রার মিল রাখে বলে জানানো হয়েছে।
বাদুড়ের কাছ থেকে পাওয়া ভাইরাসকে ধারাবাহিকভাবে মহামারি বিষয়ক নজরদারিতে রাখা উচিত বলে মনে করেন গবেষকেরা।