Ajker Patrika
হোম > বিশ্ব > চীন

বুনো শূকরের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ ঘোষণা করল চীন

অনলাইন ডেস্ক

বুনো শূকরের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ ঘোষণা করল চীন
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় গানসু প্রদেশের জিংচুয়ান কাউন্টিতে বুনো শূকর শিকারিদের একটি দল। ছবি: সিএনএন

গত অক্টোবরের এক ভোরে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বনে বিশালাকৃতির একটি প্রাণীকে তাড়া করছিল কয়েক ডজন কুকুর, আর তাদের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল একটি থার্মাল ড্রোন।

দেশটির একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার ভিডিওতে দেখা যায়, ড্রোন অপারেটর তাঁর ওয়াকিটকিতে শিকারিদের নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘কুকুরগুলো ধরে ফেলেছে! মারো! মারো!’

পরে এক শিকারি দ্রুত সেখানে গিয়ে ১২৫ কেজি ওজনের শূকরটিকে বর্শার আঘাতে হত্যা করেন। এ কাজের জন্য ওই শিকারি ২ হাজার ৪০০ ইউয়ান পুরস্কার পান, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪০ হাজার টাকা।

সেই শিকারি ছিলেন চীনের স্বায়ত্তশাসিত নিংজিয়া হুই অঞ্চলের শিজি কাউন্টিতে নিযুক্ত ছয়টি ‘বাউন্টি হান্টিং’ দলের একজন সদস্য।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, বিগত দুই দশকে চীনে বুনো শূকরের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। যদিও একসময় অতিরিক্ত শিকারের কারণে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রাণীগুলো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০০০ সালে চীনের সরকার বুনো শূকরকে সুরক্ষিত প্রাণীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়েছিল।

সেই বুনো শূকরেরা এখন ১০ হাজার থেকে বেড়ে ২০ লাখে পৌঁছে গেছে। এর ফলে শূকরের আক্রমণ ও ফসল ধ্বংসের ঘটনা এখন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৩ সালে শুধু শিজি কাউন্টিতেই শূকরের কারণে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২০ লাখ ইউয়ান। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বেশি। কিন্তু শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, হুবেই প্রদেশে ৫১ বছর বয়সী এক গ্রামবাসী শূকরের আক্রমণে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিন বছর আগে সিচুয়ান প্রদেশে একজন সরকারি কর্মকর্তাও একই রকমভাবে প্রাণ হারান।

শূকরের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে, তাদেরকে এখন শহরাঞ্চলেও দেখা যেতে শুরু করেছে। গত অক্টোবরে নানজিং শহরের চার তারকা একটি হোটেলের লবিতে একটি শূকর ঢুকে পড়েছিল।

এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই শূকর নিধনের পরিকল্পনা করেছে চীন সরকার। শুধু এই শরৎকালেই শিজি কাউন্টিতে সরকারিভাবে ৩০০ শূকর হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

শূকরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে শিকার কার্যক্রমকে স্বাগত জানালেও কিছু মানুষ এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করছে; বিশেষ করে প্রাণী সংরক্ষণ সংগঠনগুলো এই উদ্যোগকে ‘বর্বরতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

এদিকে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, শিকার ছাড়া শূকরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের আর কোনো উপায় নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক চলছে।

বুনো শূকর শিকারকে আরও কার্যকর করার জন্য বন্দুক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কিছু বিশেষজ্ঞ। এ ছাড়া বুনো শূকরের মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আইন পরিবর্তনের প্রস্তাবও এসেছে।

চীনের বন ও তৃণভূমি প্রশাসন জানিয়েছে, তারা পেশাদার শিকার কার্যক্রম সহজ করতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবস্থাপনা সংশোধন করছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে প্রকৃতির ভারসাম্য পুনঃস্থাপনই একমাত্র সমাধান। তাঁদের মতে, শূকরের প্রাকৃতিক শত্রুদের ফিরিয়ে এনে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। এতে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে সত্যিকারের সামঞ্জস্য স্থাপন করা সম্ভব হবে।

ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে উৎপাদনে একচ্ছত্র দখল হারাবে কি চীন

আজ নয়তো কাল আমরা তোমাদের ধরবই, তাইওয়ানকে চীনের হুমকি

চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিধস, নিখোঁজ অন্তত ৩০

১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চীনে ফিরলেন প্রখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১২৬, আহত ১৮৮

তিব্বতে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫, আহত ১৩০

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৫৩

ব্রহ্মপুত্রের বাঁধ বাংলাদেশ-ভারতের কোনো ক্ষতি করবে না: চীন

চীন-তাইওয়ান একীকরণ ঠেকাতে পারবে না কেউ, বছরের শেষ হুমকি দিলেন সি

চীনে সহপাঠীকে হত্যার দায়ে কিশোরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড